রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যা মামলায় তিন জনকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন- আরিফুল ইসলাম মানিক,আবদুস সামাদ পিন্টু ও সবুজ শেখ। এরমধ্যে সবুজ পলাতক রয়েছেন। অন্য দুজন রায়ের সময় আদালতে ছিলেন। মামলার বাকি আট আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। আর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আক্তার রেশমা, সিরাজুল ইসলাম কালু, আল-মামুন, সাগর, জিন্নাত, আরিফ ও ইব্রাহিম খলিল ওরফে বাবু।
মামলাটিতে মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয় বলে জানান ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এন্তাজুল হক বাবু। গত ১৩ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
লালন ভক্ত ড. শফিউল ইসলাম মুক্তমনা ও প্রগতিশীল আদর্শের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ১৫ নভেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ড. শফিউল খুনের ৫ ঘণ্টার মাথায় ফেসবুকে একটি পাতা খুলে দায় স্বীকার করে ‘আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। তাই উগ্রবাদী এই সংগঠনটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে ব্যক্তিগত কোন্দলের জেরেই খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। আর এই কোন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাসরিন আখতার রেশমার সঙ্গে।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২৩ নভেম্বর প্রথমেই রেশমার স্বামী রাবি ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুস সামাদ পিন্টুসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে রেশমাকেও গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে রেশমা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পরবর্তীতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন পরিদর্শক রেজাউস সাদিক ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।