অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট খরচ নিয়ে কি ভাবছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার বিষয়াদি দেখভাল করার দায়িত্বে ইউজিসি। সম্প্রতি দৈনিক শিক্ষায় দেখলাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও পরীক্ষা অনলাইনে পরিচালনার অনুমতি দেবার কথা ভাবছে ইউজিসি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বৈঠকও হয়েছে এই বিষয়ে। অনলাইনে পাঠদানের এই ভাবনাটি ইউজিসিকে আরো আগে ভাবা উচিত ছিলো বলেও দৈনিক শিক্ষার প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক শিক্ষাসচিব মো: নজরুল ইসলাম খান মন্তব্য করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

ডিজিটাল যুগ এখন। তা-ও আবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে অধিকাংশ মানুষ গৃহবন্দি আর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর পর্যন্তই বন্ধ থাকার আভাস পাওয়া গেছে। এই সময়ে অনলাইনে পাঠদানের উদ্যোগ প্রশংসারযোগ্য। কিন্তু এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান শুরুর আগে অবশ্যই সরকার ও ইউজিসিকে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে বলে আমি মনে করি। একজন অভিভাবক হিসেবে আমার ভাবনাগুলো তুলে ধরলাম।  

১.  পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই কিন্তু এখন গ্রামে চলে গেছেন। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানদের অনেকেই ঢাকাতে টিউশনি করে পড়ার খরচ চালায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবার সাথে সাথে তারা বাড়িতে চলে গেছে।
বাংলাদেশের সব এলাকায় ইন্টারনেট কি এখনও সহজলভ্য ও নিরবিচ্ছিন্ন হয়েছে? কিংবা মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের নেটওয়ার্ক কি সহজলভ্য? যতদূর জানি,পার্বত্যঅঞ্চলসহ অনেক এলাকায় ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে নেটওয়ার্ক থাকে না। আর এখন তো প্রতিদিনই দেশে কোথাও না কোথাও ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে।

২. মফঃস্বলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাসায় ওয়াইফাই কানেকশন নেই, ব্রডব্যান্ড লাইন নেই, সেক্ষেত্রে তাকে নির্ভর করতে হবে মোবাইল ডাটার ওপর। প্রতিদিন অন্তত ২ ঘন্টা অনলাইনে ক্লাস করলে কত টাকার মোবাইল ডাটা খরচ হবে, এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের কারো কোন ধারণা আছে? এই খরচ কি শিক্ষার্থীরা জোগাতে পারবে? সরকার কি তবে সব শিক্ষার্থীর জন্য মোবাইল ডাটা /ইন্টারনেট ব্যয় ফ্রি করে দেবে?

৩. যদি ধরে নেই কিছু শিক্ষার্থীর রাউটার কেনার সামর্থ্য আছে, সে ওয়াইফাই সংযোগ দিয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেবে, কিন্তু সব দোকানপাট তো বন্ধ, সে কিনবে কোথা থেকে? আর খোলা থাকলেও মফঃস্বলের সব শহরে কিংবা গ্রামে এখন কি রাউটার পাওয়া যাবে? 

এরকম আরও অনেক প্রশ্ন আছে।

দেশের গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ শুধু করোনা নিয়ে টক শো বা লেখালেখি নয়, শিক্ষার্থীদের এই বাস্তব সমস্যাগুলো তুলে ধরুন টিভিতে কিংবা প্রিন্ট বা অনলাইন পত্রিকায়। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলুন। 

পাদটীকা :

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের একটি প্রজন্ম কিন্তু ১ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়নি। এরশাদ সাহেবের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মাসের পর মাস রাজনৈতিক কারণে বন্ধ পেয়েছি, ৩ বছরের কোর্স শেষ হয়েছে ৬ বছরে। তাতে কি আমরা খুব পিছিয়ে গেছি, আমরা কি ঘুরে দাঁড়াইনি? আর এখন তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনও সেশনজটই নেই, তাহলে আমরা কেন একটু ধৈর্য ধরছি না?

প্রাইভেট ইউনিভারসিটির ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে?

লেখক: মো. মনিরুজ্জামান। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল শিক্ষার্থীর অভিভাবক। রাজধানীতে বসবাস।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029909610748291