গতরাত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব কে নেবেন এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের সর্বত্র। বিভিন্ন সূত্রে ১৫ জনের নাম আলোচনায়। তবে, এক এগারো সরকারের সময় সাহসী ভূমিকা রেখে জনমনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেওয়া ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নূরুল কবীরের নাম আলোচনায় রয়েছে। কিন্তু এক প্রশ্নের জবাবে সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আমি ওইসবের মধ্যে যাবো না ‘ ।
আরো যারা আলোচনায় তারা হলেন --অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আরো যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাঁরা হলেন বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইকরামুল হক, সাবেক পরিবেশ সচিব ড. মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের সাবেক পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন, সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা, বিজিবির সাবেক ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মঈনুল ইসলাম, সাবেক সচিব ফজলুল কবির খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোরশেদ খান, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ও চাকমা সার্কেলের প্রধান পরামর্শক কুইন ইয়ান ইয়ান।
এদিকে আজ মঙ্গলবার খুব সকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রস্তাব করেছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের। তারা ভিডিও বার্তায় এ কথাও বলেছেন যে, তারা ইউনুসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তিনি রাজী আছেন বলেও জানিয়েছেন ছাত্র নেতাদের।
তবে গত রোববার সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে অবিলম্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের রূপরেখা প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কের পক্ষে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ‘রূপান্তরের রূপরেখা’ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রস্তাবে বলা হয়, অবিলম্বে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর সম্মতিক্রমে নাগরিক-রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক, বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণির অন্তর্ভুক্তিমূলক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। এই সরকারের সদস্য নির্বাচনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। এই সরকারের কাছে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। এরপর ১১ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। ওই মন্ত্রিসভায় সদস্য ছিলেন প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ জন। পরে ১ মার্চ আরও সাতজন প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা হয় প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৪ জন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৫ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পাঁচ বছরের জন্য মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এ মন্ত্রিসভা প্রায় সাত মাসের মাথায় বিলুপ্ত হলো।