দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ডিএসইউ কামিল মাদরাসা অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য আয়োজিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়ে নিয়োগের জন্য সুপারিশ পান মুফতি হামিদুল ইসলাম। এরপর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তিনি নিয়োগ পাননি। বরং একই পদে নিয়োগ দিতে নতুন করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হামিদুল ইসলামকে ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’ বানিয়ে মাদরাসা পরিচালনা করছেন সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা জাহিদ হোসেন; যিনি টানা ২৬ বছর চাকরি করার পর গত ১ মার্চ স্বাভাবিক অবসরে যান। চাকরি ছাড়ার ৯ মাস পার হলেও এখনো তিনি অফিস করেন অধ্যক্ষের দপ্তরেই। মাদরাসা গভর্নিং বডির রেজল্যুশন খাতা ও প্রতিষ্ঠানটির সাতটি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন তিনিই। চাকরি ছাড়ার পরও নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে ‘সিন্ডিকেট’ তৈরি করে মাদরাসার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাওলানা জাহিদ হোসেন মোবাইল ফোনে লেন, ‘আমি সভাপতির অনুরোধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সহায়তা করার জন্য এখনো অফিস করি। হামিদুল সাহেব রেজল্যুশন খাতা লিখতে পারেন না বলে আমাকে রাখতে হচ্ছে। ব্যাংক হিসাবের সবকিছু নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নামে ট্রান্সফারের আবেদন করা হয়েছে। মাদরাসার বৃহত্তর স্বার্থে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্নিং বডি। এখানে আমার কোনো হাত নেই।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাওলানা জাহিদ হোসেন অবসরে যাওয়ার পর ওই অধ্যক্ষ পদের জন্য আবেদন করেন ১০ বছর ধরে উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা মুফতি হামিদুল। পাঁচ সদস্যের নিয়োগ বোর্ডের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হন তিনি। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে ‘প্রশাসনিক অযোগ্যতা’র অভিযোগ তুলে সাবেক অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষক ও অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দেন সভাপতির কাছে। তাঁরা জানান, হামিদুলকে অধ্যক্ষ করা হলে তাঁরা এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেবেন। উদ্ভূত পরিস্থিতে হামিদুলের নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করে মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদ। তারা নতুন করে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে গত ১ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি মমতাজুল করীম আনসারী বলেন, ‘হামিদুল ভালো শিক্ষক হলেও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা না থাকার অজুহাত তুলেছেন অন্য শিক্ষকেরা। তাঁদের বিরোধিতার কারণেই মূলত হামিদুলকে নিয়োগ দেওয়া যায়নি।’
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুফতি হামিদুল ইসলাম বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ ৯ মাস আগে অবসরে গেলেও এখনো মাদরাসায় অধ্যক্ষের দপ্তরে অফিস করছেন। ক্ষমতা ধরে রাখতে নিজের পছন্দের অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে পত্রিকায় নতুন করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।