বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)।
গতকাল রোববার দলের বনানীর কার্যালয়ে জরুরি যৌথ সভায় এই ১১ দফা দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে দাবিগুলো গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। দাবিগুলো হলো—শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের প্রক্রিয়াকে তীব্র নিন্দা জানানো, নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা, নিহত আবু সাইদসহ সব শহীদের প্রকৃত মৃত্যুর কারণ না দিয়ে মিথ্যা এজাহার দাখিলের নিন্দা জানানো, নিহত শিক্ষার্থীরা বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত হবে এবং একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত শহীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। [ inside-ad]
এ ছাড়া ছাত্র হত্যায় জড়িত সরকারি কর্মকর্তা, উসকানিদাতাকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা, ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানি/নির্যাতন না করা, ছাত্রদের নামে করা মামলা প্রত্যাহার এবং আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থী ও নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারপরিজনকে সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসা, অবিলম্বে ইন্টারনেটসহ সব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাপা।
সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার উদ্বেগ প্রকাশ করে সভায় বলা হয়, এসব স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। এ দায় সরকার এড়াতে পারে না ।
অবিলম্বে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে জাপা বলছে, প্রকৃত ছাত্রদের হলে প্রশাসনের মাধ্যমে এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সহিংসতায় নিহত ও আহত সাংবাদিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
জাপা চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সভাপতিত্বে দলের জরুরি যৌথ সভা হয়।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আন্দোলনরত ছাত্ররা রাজনৈতিক দলগুলোকে সরাসরি পাশে চায়নি বলেই আমরা তাদের সঙ্গে মাঠে ছিলাম না।
চুন্নু আরও বলেন, কোনো মন্ত্রী বা এমপির বাড়িতে হামলা হয়নি। সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি স্থাপনাগুলো রক্ষায় তাদের কোনো উদ্যোগ ছিল না। আন্দোলনরতদের গ্রেফতারের নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
যৌথ সভায় বক্তব্য দেন, জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর অব. রানা মো. সোহেল, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, মোস্তাফিজুর রহমান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, খলিলুর রহমান খলিল, সিকদার আনিসুর রহমান, মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সামছুল হক প্রমুখ।