অবৈধ নিয়োগে ২৩ বছর চাকরি, হাইকোর্টে রিট

নওগাঁ প্রতিনিধি |

অবৈধ নিয়োগে ২৩ বছর চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রমজান আলী সাকিদারের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষ পদে তার নিয়োগে ১০ বছরের চাকরি অভিজ্ঞতার বিধিমালাও মানা হয়নি। নিজের নিয়োগ বোর্ডে অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক কে এম কায়সার আলী।
তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অধ্যক্ষ রমজান আলী ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলার মঙ্গলবাড়ী ময়েজ মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক পদে যোগদান করেন।

৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ মে তিনি ওই কলেজে এমপিওভুক্ত হন। সেখানে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেন। এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটির ৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবরের সভা ও ৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর নিয়োগ অনুমোদনের সভায় অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ৩ জানুয়ারি তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় তার ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা ছিলো না।

মাউশির সহকারী পরিচালক কেএম কায়সার আলীর তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ পদে রমজান আলীর অবৈধভাবে নিয়োগ, একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে। এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ অবস্থায় অধ্যক্ষ রমজান আলীর নিয়োগ বাতিলসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকসিদ্ধেশরী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল। এর প্রেক্ষিতে পত্রপ্রাপ্তির ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

এ আদেশের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. রেজা হাসান মাহমুদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার তদন্তের জন্য ‘মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট’ এর অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ড. রেজা হাসান মাহমুদ।

হাইকোর্টে রিটের বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রমজান আলী সাকিদার বলেন, এটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তণীয় বিষয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিস্পত্তি করে নিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

জানতে চাইলে মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো পত্র পাইনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033450126647949