অবৈধ নিয়োগ : ৩ শিক্ষকের বেতন-ভাতা ফেরতের নির্দেশ

নীলফামারী প্রতিনিধি |

অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা ডিগ্রি কলেজ। ভুয়া পদে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় ৩য় শিক্ষকের উত্তোলিত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেয়ায় থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সূত্র জানায়, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তিস্তা ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে তৃতীয় কোটায় ভৃগুরাম চক্রবর্তী, আনোয়ারুল ইসলাম এবং অধ্যক্ষ  সৈয়দ আলী তার নিজ শ্যালকের স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়োগ দেন এবং অবৈধভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চল, রংপুর অফিস থেকে এমপিওভুক্ত করানো হয়।

সূত্র জানায়, ভৃগুরাম চক্রবর্তীর ফাইল একাধিকবার ‘ল্যাক অব কোয়ালিফিকেশনের কারণে সর্বশেষ গত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর থেকে ৩য় বারের মতো বাতিল হওয়ার পরে অলৌকিকভাবে আবার ওই মাসের এমপিও লিস্টে তার নাম আসে। এদিকে গত ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক (কলেজ-২) এনামূল হক হাওলাদার স্বাক্ষরিত পত্রে ভৃশুরাম চক্রবর্তীসহ উল্লিখিত ওই ৩ শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে এমপিও বাবদ উত্তোলিত বেতন-ভাতার অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

সূত্র জানায়, ভৃগুরাম চক্রবর্তী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে যে সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন সেটিও ভুয়া। কারণ ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন না বলে গত ১৬ই নভেম্বর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ সরকারি প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়।

এ ছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্তীকে নিয়োগ প্রদানের মাত্র সাতদিন আগে বাংলা বিভাগে ৩য় শিক্ষক হিসেবে জনৈক এনামুল হক নামের অপর একজনকে নিয়োগ দেয়া হলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভৃগুরাম চক্তবর্তীর নাম এমপিও লিস্টে পাঠানো হয়। যা পরবর্তীতে স্থগিত হয়ে যায়। এ ছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্তী ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে অনার্স ও ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে এমএ পাস করার বিষয়টি আমলে নিয়েই এমপিও তালিকা থেকে তার ফাইল বাতিল করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভৃগুরাম চক্রবর্তী ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার নিয়োগ ও যোগদানপত্রের বিষয় পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেছেন। যা গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি মহাপরিচালক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় স্থানীয় ভাবে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031139850616455