অবৈধ বাংলাদেশিদের তথ্য চায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা এখনকার বাংলাদেশ থেকে ঠিক কী পরিমাণ অভিবাসী আসামে গেছে, তাদের কতজনকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা বাদ পড়েছে তাদেরই-বা কী হয়েছে, আসামে বাংলাদেশিদের নিয়ে এত আপত্তি অথচ পশ্চিমবঙ্গে তা কেন হয়নি এ প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আসামের রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ও বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচজন বিচাপতির একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ। এ ছাড়া ভারত সরকার অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনে ১৯৮৫-এর পর সংযোজিত ৬-এ ধারা নিয়ে শুনানি চলছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক এ বেঞ্চে। গত বৃহস্পতিবার শুনানিতে ভারতে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হওয়া বাংলাদেশি অভিবাসীদের সম্পর্কে আসাম রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের প্রতি কিছু প্রশ্ন রাখে সুপ্রিম কোর্ট।

নাগরিকত্ব আইনের ৬(এ) ধারাটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের মামলার শুনানি চলছে ভারতের শীর্ষ আদালতে। এ ধারাটি সংযোজিত হয়েছিল ১৯৮৫- এর আসাম চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে। ১৯৬৬-এর ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দিন ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পর্যন্ত বেআইনিভাবে আসামে প্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব প্রদানে ওই ধারাটি সংযোজিত হয়। মামলাকারীদের অভিযোগ, এ ধারাটির ফলে আসামে বেআইনিভাবে প্রবেশকারীদের নিয়ে সমস্যা জটিল হয়েছে।

শুনানিতে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ভারত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চের মধ্যে প্রবেশকারী ঠিক কতজনকে ৬-এ(২) ধারায় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে? ওই সময়সীমা মাথায় রেখে কতজনকে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে বিদেশি ঘোষণা করা হয়েছে? সার্বিকভাবে ভারতে অবৈধ প্রবেশের চিত্রটা কী? ১৯৭১-এর ২৫ মার্চের পর প্রবেশকারীদের বিষয় বিবেচনায় কতগুলো ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গড়া হয়েছে, কত মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, কত মামলা জমে রয়েছে, এক-একটি মামলা নিষ্পত্তিতে কত সময় লাগে, গুয়াহাটি হাইকোর্টে কত আপিল পড়ে রয়েছে? ভারত সরকারের সঙ্গে আসাম সরকারকেও এ বিষয়ে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

এদিন এই ৬(এ) ধারা নিয়ে শুনানিতেই ভারতের প্রধান বিচারপতি আরও একটি প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন, কেন বাংলাদেশের (পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তান) সঙ্গে বিস্তৃততর সীমানার পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি বিবেচনায় না এনেই শুধু আসামের ক্ষেত্রে ধারাটি সংযোজন করা হলো?

প্রসঙ্গত, ভিনদেশি মানুষের প্রবেশবিরোধী আসাম আন্দোলনের উত্তাল পরিস্থিতিতে শান্তি স্থাপনে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে  রাজীব গান্ধী সরকারের আমলে আসাম চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেই সূত্রেই ঘটে ৬(এ) ধারার সংযোজন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দেই  ধারাটি নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অনেক প্রশ্ন তুলেছিল। ওই ধারার কারণে আসামবাসীর অধিকারহানি হচ্ছে কি না, চিরাচরিত সংস্কৃতি সংরক্ষণে বিপদ ঘনাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নও ছিল। ২০১৫-তেই মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হয়। সেটির শুনানি শুরু হলো ২০২৩ সালের শেষ মাসে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030770301818848