অভিজ্ঞ প্রভাষকদের অধ্যক্ষ পদে আবেদনের সুযোগ দিন

মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম |

অধ্যক্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ। একটি কলেজ পরিচালনার জন্য একজন অধ্যক্ষ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। সেক্ষেত্রে মেধাবী, দক্ষ ও আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একজন অধ্যক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। ২০১৮ নীতিমালা অনুসারে সেই সুযোগটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এমপিও নীতিমালা ২০১০ অনুসারে প্রভাষক পদে দীর্ঘ ১২ বছর দক্ষতার সাথে শিক্ষকতার পর উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ ও ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে আবেদনযোগ্য প্রার্থী হতে পারতেন। আর ১৫ বছর অভিজ্ঞতা হলে ডিগ্রি (স্নাতক) কলেজের অধ্যক্ষ প্রার্থী হওয়া যেত। ফলে সারা বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকের অংশগ্রহণে তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হতেন। কিন্তু ২০১৮ এমপিও নীতিমালা জারি ও কিছু শর্তারোপ করায় বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য যোগ্য প্রার্থী।

নীতিমালায় উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে অধ্যক্ষ ও ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে ৫:২ অনুপাতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ সর্বমোট ১২ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীরাই আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আবার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হতে হলে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ/ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞ প্রার্থীরাই যোগ্য। এমন শর্তানুযায়ী পূর্বের আবেদনযোগ্য প্রার্থী প্রভাষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ফলে সহজে সহকারী অধ্যাপকও হতে পারবেন না বিধায় সারা জীবনে অধ্যক্ষ হতে পারবেন না। বেলা শেষে প্রভাষক পদবি নিয়েই অবসর যেতে হচ্ছে।

সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির প্রধান শর্ত ৮ বছর প্রভাষক পদে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি ৫:২ অনুপাতের ভিত্তিতে ৭ জন প্রভাষকের মধ্যে মাত্র ২ জন সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। যা অটো প্রমোশন (কোনো রকম পদোন্নতি পরীক্ষা ছাড়া)। কোনো কলেজে ৪/৫জন প্রভাষক থাকলে মাত্র ১ জন সহকারী অধ্যাপক হবেন। কমিটির সমস্যা ও অনুপাতের বেড়াজালের কারণে অনেক কলেজে সহকারী অধ্যাপক একজনও নেই। অনেকে যোগ্য ও অভিজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও জীবনে অধ্যক্ষ হতে পারবেন না। যা কালো প্রথা বা কালো আইন। ফলে সহকারী অধ্যাপক ১টি জেলায় কয়েকজন প্রার্থী ও সারাদেশে অল্প সংখ্যক। এদের মধ্যে অনেকেই আবার অধ্যক্ষ হতে আগ্রহী নয় বা প্রশাসনিক পদ অধ্যক্ষের জন্য ফিট নয়।

যেখানে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী প্রভাষক এবং সহকারী অধ্যাপক প্রতিযোগিতা করে বাছাই হতো সেখানে অল্পসংখ্যক প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ফলে যোগ্য প্রার্থীর অভাব হবে। অথবা যারা আগ্রহী নন বা চাকরি শেষ পর্যায় তাদেরকে ডেকে এনে দায়িত্ব দিতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাব্যবস্থা স্থবির ও ধ্স নামতে পারে।

এ ক্ষেত্রে অনুপাত প্রথা বাতিল করতে হবে। অথবা ২০১০ নীতিমালা অনুসারে ১২/১৫ বছর অভিজ্ঞ প্রভাষকদের জন্য অধ্যক্ষ পদে আবেদনের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। তাই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অনুরোধ- অনুপাত প্রথা ৫:২ বাতিল করুন। অধ্যক্ষ নিয়োগে ২০১০ নীতিমালার ন্যায় ২০১৮ নীতিমালা সংশোধন করে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। যোগ্যদের দেশে ও জাতির সেবায় সুযোগ দিন। শিক্ষা হোক সমতা ও বৈষম্যহীন।

লেখক: প্রভাষক (ইংরেজি), সমষপুর কলেজ, মুন্সীগঞ্জ 

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026569366455078