অভিভাবককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

পিরোজপুর প্রতিনিধি |

পিরোজপুরের নেছারাবাদে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

আজ বুধবার সকালে এই অভিযোগ দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসরুমে লাঞ্ছিতের এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল হক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দম্পতিকে ‘ঝাড়ুপেটা’ করে বিদ্যালয় থেকে বের করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিভাবক দম্পতির তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে কোভিড-১৯-এর প্রথম ডোজের টিকা না দিয়ে জোরপূর্বক দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার কারণ জানতে চাওয়ায় তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা হলেন অশোক দাস ও মিতু ব্যাপারী। অশোক দাস উপজেলার শেহাংগক পাথালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। 

জানতে চাইলে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, ‘ওই বাচ্চাকে যদি প্রথম ডোজের টিকা না দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে ফেলে, তাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করি। কারণ প্রথম ডোজের টিকা আর দ্বিতীয় ডোজের টিকা একই।’ 

ভুক্তভোগী মিতু ব্যাপারী বলেন, ‘আমার মেয়ে ঐশ্বর্য দাস স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির একজন ছাত্রী। গতকাল মঙ্গলবার মেয়েকে বিদ্যালয়ে নিয়ে যাই। আমার মেয়ে যখন মাঠে খেলাধুলা করছিল, এ সময় আচমকা ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাসিনা বেগম তাকে ধরে কোভিড-১৯-এর টিকা দেয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যায়। এ সময় আমি ওই শিক্ষিকাকে বলি, আমার মেয়েকে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ দেয়া হয়নি। তখন হাসিনা বেগম সে কথা না শুনে বলেন, ওটা আমি দেখে নেব, কোনো সমস্যা নেই। বলে আমার মেয়েকে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে টিকা দিয়ে ফেলে। 

মিতু ব্যাপারী আরও বলেন, ‘টিকা দেয়ার পর মেয়েকে বাসায় নেওয়ার পথে কিছুটা অসুস্থতা বোধ করে। আমার স্বামীকে বিষয়টি জানাই। আমার স্বামীও অন্য একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পরে আমার স্বামী এই বিদ্যালয়ে এসে টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল হক ও সহকারী শিক্ষক সুজন সমাদ্দার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় আমার স্বামী একটু রাগান্বিত হলে প্রধান শিক্ষক শামসুল হক আমাদের ঝাড়ুপেটা করে বের করে দিতে তেড়ে আসেন। পরে আমরা আত্মসম্মানের কথা ভেবে চলে আসি।’ 

তবে অভিযোগের বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শামসুল হক বলেন, ‘তাদের সঙ্গে তেমন কিছুই হয়নি। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ঘটনার সময় আমি ছিলাম। বরং উল্টো ওই দম্পতি আমাদের ওপর উত্তেজিত হয়েছিল।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস বলেন, ‘ওই অভিভাবক দম্পতি আমার আমার কাছে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ হোসেন চৌধুরী, গিয়াস উদ্দীন ও মঞ্জু মোল্লাকে নিয়ে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’ 

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028469562530518