অরক্ষিত শেরে-ই বাংলা একে ফজলুল হকের জন্মস্থান

অলোক সাহা(ঝালকাঠি) প্রতিনিধি |

অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলার বাঘ খ্যাত শেরে-ই বাংলা একে ফজলুল হক বাংলার রাজনীতিতে এক উজ্জল নক্ষত্র। বাঙ্গালী জাতির জীবনে ফজলুল হকের অবদান অনেক। আজ তাঁর ১৪৪ তম জন্মবার্ষিকী।

১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়ার গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে  ফজলুল হকের নামে বহু স্থাপনা থাকলেও তাঁর জন্মস্থানে নেই তেমন কিছুই। জন্মস্মৃতিসহ শৈশব কৈশরে বেরে ওঠার স্মৃতিও আজ বিলুপ্ত প্রায়।এমনকি তার জন্মস্থানটিও (আতুরঘর)  জরাজীর্ণ অবস্থায় পরে আছে। পলেস্তরা খসে পরছে ওই ভবনটির। পুরো বাড়িতে আজ পর্যন্ত উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। জন্মের প্রায় দেড়শ বছর কেটে গেলেও  অযত্ম আর অবহেলায় পড়ে আছে তার জন্মস্মৃতি।

ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজাপুরের সাতুরিয়ার মিয়া বংশের জমিদার বাড়িতেই জন্ম নিয়েছিলেন শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক। শৈশবের বেশিরভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন তাঁর এই মামার বাড়িতেই।এখানে ঘাট বাঁধানো পুকুরে গোসল করা, পাশের নদীতে সাঁতার কাটা, গাছ থেকে বাদাম পেড়ে খাওয়াসহ অনেক স্মৃতি পড়ে আছে এই বাড়িতে। মাত্র কয়েকবছর তার ব্যবহৃত বহু আসবাবপত্র এই বাড়িতে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও মূল্যবান ওইসব জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ২৮ মার্চ তাঁর জন্মগৃহটিকে পুরাতত্ত্ব হিসেবে গেজেট ভুক্ত করার একটি নোটিশ লাগিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। আজ পর্যন্ত এটি সংরক্ষণে আর কোন পদক্ষেপ নেননি। একটি মাত্র সাইবোর্ড লাগিয়ে তাদের দায়িত্ব সেরেছেন। এখানে একটি যাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

অবহেলিত ওই অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারের কথা চিন্তা করে ফজলুল হক ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে সাতুরিয়া এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিরও আজ বেহাল দশা। স্কুলটির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের কোন উদ্যোগ এ পর্যন্ত নেয়া হয়নি।স্কুলটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। ভবন ও বেঞ্চ সংকটসহ শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি।

বিদ্যালয়ের ছাত্র রাসেদ ইসলাম বলেন, ‘ এত বড় বিখ্যাত লোকের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে লেখা-পড়া করতে পেরে আমরা গর্ভিত। কিন্তু ভবন ভাঙ্গা, বেঞ্জ সংকটসহ এই বিদ্যালয়ের অনেক সমস্যা রয়েছে নেই কোন লাইব্রেরী। এগুলো সমাধান করা হলে ভাল হয়। তবে স্থানীয়সহ দূর দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক ও শিক্ষার্থীদের  দাবী এখানে একটি শের ই বাংলা স্মৃতি জাদুঘর ও একটি লাইব্রেরিসহ তার জন্মস্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।

সাতুরিয়া এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘ আমাদের বিদ্যালয়ের নানা সমস্যার কথা উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু কোন সমাধান হয়নি।

এলাকার প্রবীন ব্যাক্তি সত্তার মিঞা বলেন, এখানের প্রতিটি স্থানে শে-ই বাংলা একে ফজলুল হকের ছোয়া আছে। জন্মস্থান ও তার জন্মস্মৃতি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিনিয়ত বহু পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন । তবে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান তার জন্মস্মৃতি আর জরাজীর্ণ ধ্বংসস্তুপ দেখে। কিন্তু এত বড় বিখ্যাত লোকের জন্মস্থান আজও অরক্ষিত এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা বেগম পারুল জানান, জন্মস্থানটি তিনি পরিদর্শন করেছেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০১০ খ্রিস্টাব্দে তাদের তৎত্বাবধানে নিয়ে ভবনটির ছাদ সংস্কার এবং একটি ভিত্তিস্তম্ভ স্থাপন করলেও তারপর থেকে আর কোন দৃশ্যমান কাজ করেনি। তার স্মৃতি রক্ষায় জন্মস্থানটি সঠিকভাবে সংরক্ষণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অবহিত করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030179023742676