অরিত্রীর আত্মহত্যা: দুই শিক্ষিকার মামলার রায় ২১ জানুয়ারি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষকের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি। 

ঢাকার দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন সেদিন এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে সোমবার তিনি আলোচিত এ মামলার রায়ের তারিখ ঠিক করে দেন। 

মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তার জামিনে রয়েছেন।

দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার এ মামলার তাদের সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ড, সঙ্গে অর্থদণ্ড হতে পারে বলে জানান বাদীর ব্যক্তিগত আইনজীবী সবুজ বাড়ৈ।

তিনি বলেন, এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম। পরে মামলাটি দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয় নথিপত্র বিচারের জন্য ।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী।

এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পর তার সহপাঠীরা বিক্ষোভে নামে। ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেপ্তারও করলেও পরে তারা জামিন পান।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর বাবা লেখেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে তাদের অপমান করে। ওই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে অরিত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ নাজনীন ও জিনাতকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার।

সেখানে বলা হয়, আসামিদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাও আসামি ছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এরপর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নাজনীন ফেরদৌস জিনাত আক্তারের বিচার শুরু করে আদালত।

মামলার ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম।

অরিত্রীর বাবা, মামলার বাদী দিলীপ অধিকারী, মা বিউটি অধিকারী, অরিত্রীদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব, অরিত্রীর বাবার সহকর্মী সনজয় অধিকারী, প্রতিবেশী মেরিনা মণ্ডল সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।

আসামিদের পক্ষে এ মামলা লড়ছেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040750503540039