অরিত্রীর আত্মহত্যা: ফের পেছালো রায়

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার রায় ষষ্ঠ দফা পিছিয়ে গেছে।

ঢাকার দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল।

পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) রাহিমুল করিম আকন্দ হিমেল  জানান, রায়ের নতুন তারিখ পরে জানানো হবে।
বারবার রায় পেছানোয় হতাশা প্রকাশ করে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী  বলেন, “আমি পেশকার হিমেলকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেন, ‘আজ আদালতে আসার দরকার নেই’।

“আজ রায় হবে না বলে জানিয়েছেন। আর বলেছেন রায়ের জন্য পরবর্তী তারিখ পরে জানাবেন।”

বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৭ নভেম্বর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে আসে।
প্রথমে রায়ের জন্য ২১ জানুয়ারি তারিখ দিয়েছিল আদালত। ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করা হয়। কিন্তু ওই দিনও একই কারণে তা পিছিয়ে ৩ মার্চ ঠিক করা হয়। পরের দফায় রায় পিছিয়ে তারিখ পড়ে ৯ এপ্রিল। তারপর ৩ জুন নতুন তারিখ রাখা হয়েছিল। এরপর ২৫ জুলাইও রায় হল না।

মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তার জামিনে রয়েছেন। এদিন তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার এ মামলার তাদের সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ড, সঙ্গে অর্থদণ্ড হতে পারে।
কী ঘটেছিল

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী।

এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পর তার সহপাঠীরা বিক্ষোভে নামে।

৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেফতার করলেও পরে তারা জামিন পান।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর বাবা লেখেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে তাদের অপমান করে। ওই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে অরিত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের  ২৮ মার্চ নাজনীন ও জিনাতকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার।

সেখানে বলা হয়, আসামিদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাও আসামি ছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের  ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিচার শুরু করে আদালত।

মামলার ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম।

অরিত্রীর বাবা, মামলার বাদী দিলীপ অধিকারী, মা বিউটি অধিকারী, অরিত্রীদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব, অরিত্রীর বাবার সহকর্মী সনজয় অধিকারী, প্রতিবেশী মেরিনা মণ্ডল সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055160522460938