একাত্তরে ৫০ লাখ পরিবারকে কেউ অর্থ সাহায্য দেয়নি। তারপরও খেয়ে না খেয়ে সবাই একাত্ম হয়েছেন। যুদ্ধের মন্ত্রদাতাকে তাঁর বিশ্বস্ত সহচরগণ সঠিক উপদেশ দিয়েছেন। আজকের মতো শত শত পাইক-পেয়াদা ছিলোনা তখন। সভাসদবৃন্দ ছিলো জনগণ। অথচ আজ জনগণ দূরে চলে যাচ্ছে। পাইক-পেয়াদার চামচামিতে প্রায় সব জায়গা কলুষিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি হচ্ছে। এখানে একটি সমাজ গড়ে উঠেনি। প্রাইম সিটি ঢাকার মধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক কাঠামো তৈরী হয়েছে।
করোনা যুদ্ধকালে এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। সব রাস্তাঘাট ও ফুটপাত বেদখল হয়েছে। এখানে ভ্যানবাজার সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। একটি উদাহরণ, মগবাজার ওয়্যারলেস থেকে মধুবাগ হয়ে হাতিরঝিল পর্যন্ত মাত্র ১ কিলো মিটার রাস্তায় কমপক্ষে পাঁচশতাধিক অবৈধ চৌকিদোকান, ভ্যান দোকান, মাছের দোকান, মুরগীর, পোলাও চালের দোকান, চায়ের দোকান রাস্তা ও ফুটপাত দখলে নিয়েছে। এখানে একটি থানাও আছে গলির মধ্যে। গ্রাম্য প্রবাদ আছে ‘বেড়ায় ধান খায়’।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা
এখানে রিক্সা-সাইকেল গ্যারেজ ও বিভিন্ন টং দোকানের আদলে নেশা দ্রব্য বিক্রির উন্মুক্ত পসরা বসছে। এদের দেখভাল করে কারা কিভাবে নিজেদের আখের গোছাচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। ফুটপাত ও এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক বিশেষত ইয়াবা/ফেনসিডিলের কারবার করে অনেকেই রাতারাতি অর্থ-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে গেছেন। এরপর টাকার জোরে ক্ষমতা, প্রভাব, প্রশাসনিক দাপট দেখিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে এলাকায় আলাদা সাম্রাজ্যও গড়ে তুলছেন। এদের অনেকেই আবার টাকার বিনিময় নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় গড়ে তুলেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত কিশোর গ্যাংও তাদেরই সৃষ্টি। অনেক এলাকায়ই আধিপত্য নিয়ে ঘটছে মারামারি, কোপাকুপি এমনকি খুনাখুনির ঘটনা। পুজিবিহীন এ ব্যবসায় স্বল্প সময়ে কোটিপতি হয়ে উঠার অপ্রতিরোধ্য প্রতিযোগিতা চলছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। আর এর বলি হচ্ছে সাধারণ জনগণ। সমাজ বিনির্মানকারী সভ্যরা অসহায় হয়ে পড়ছে।
জনগণ এর জন্য প্রশাসন/পুলিশের উদাসীনতা, কিছু জন প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোসকতাকেই দায়ী মনে করেন।
যে কোনো উপায়েই এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে ভয়াবহ সামাজিক বিশৃঙ্খলায় জীবনযাত্রা অচল হলে আর কী-ই-বা করার থাকবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
জনকল্যাণের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্র বা সরকার শৈথিল্যের আশ্রয় নিলে জনগণ হতাশ হয়।
বঙ্গবন্ধুর কর্মই জনগণের শক্তি ও সাহসের জায়গা ছিলো। যা বাঙালিকে মাটি কামড়ে জীবনযাপন করতে শেখায়। সহজ-সরল বাঙালি একটি যুদ্ধের ডাকের অপেক্ষা করে। প্রেক্ষাপট তৈরী হলে জনগণই যুদ্ধে শামিল হয়। স্বাধীন বাংলাদেশ ভূমিষ্ঠ হয়। সামাজিক দূর্বৃত্তায়ন দমন করতে না পারলে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আক্ষেপ বাড়তেই থাকবে। অঢেল জনপ্রিয়তায় সিক্ত বাঙালির আশা-ভরসার স্থান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই জনগণের সর্বোচ্চ মঙ্গলের চিন্তা করেন।
অরিন্দমের-কলাম