অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ কবে জানে না কেউ, কঠোর আন্দোলনের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ নিয়ে সৃষ্ট আইনি জটিলতা দূর হলেও এসব পদে নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হচ্ছে না। কবে নাগাদ এসব পদে নিয়োগ সুপারিশ করা হতে পারে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্টভাবে কোন পরিকল্পনা এখনো করেনি এনটিআরসিএ। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের কারণে এনটিআরসিএ কার্যালয় বন্ধ আছে। কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গণবিজ্ঞপ্তির ফল নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। রোববার (১১ জুলাই) কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আদালতের আদেশের জন্য এনটিআরসিএ অপেক্ষা করছে। তবে, কবে নাগাদ ফল প্রকাশ হতে পারে সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি কেউ।  

এদিকে দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন নিবন্ধিতরা। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা না হলে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন তারা। রোববার (১১ জুলাই) নিবন্ধিত প্রার্থীদের নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে প্রার্থীরা এনটিআরসিএ কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন।

 

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, এখনো গণবিজ্ঞপ্তির ফল নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ফল প্রকাশের জন্য আদলতের আদেশের কপি লাগবে বলে কোন কোন কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন। সেজন্যই অপেক্ষা। লকডাউনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, লকডাউনের কারণে অফিস বন্ধ। কিছুই বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা হবে। 
 
এদিকে প্রার্থীরা বলছেন, শূন্য পদের বিপরীতে প্রায় দেড় লাখ আবেদনকারী চূড়ান্ত নিয়োগের ফলের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় পার করছে। এনটিআরসিএ ঠুনকো অজুহাতে হাজার হাজার বেকার নিবন্ধনধারীদের কষ্ট দিচ্ছে, তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যা অমানবিক ও নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছুই নয়। ফল প্রকাশে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

নিয়োগ প্রত্যাশীরা জানান, একাধিক আবেদন করায় শিক্ষিত বেকাররা মারাত্মকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকেই ধার-দেনা করেছেন। এমনকি জমি ও মূল্যবান সম্পদ বন্ধক রেখেও আবেদন করেছেন। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কোন কোন কর্মকর্তা নিজের অসৎ উদ্দেশ্যসাধনে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশে বিলম্ব করছেন বলেও অভিযোগ প্রার্থীদের।

নিবন্ধিত প্রার্থীদের নেতা শান্ত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমসকে বলেন, সারাদেশের সকল নিয়োগ প্রত্যাশীরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হাজারো নিয়োগ প্রত্যাশী রাজপথে নামবে। আমরা প্রায় দেড়লাখ প্রার্থী আবেদন করেছি। আমরা হাজার হাজার টাকা খরচ করে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি আর আমরা ধৈর্য ধরতে চাই না। 

তিনি আরও বলেন, প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ না করায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক- সামাজিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা, দক্ষ ও মানসম্মত শিক্ষক তৈরি ও শিক্ষাক্ষেত্রের উন্নয়নে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে লাখো নিবন্ধিত বেকার শিক্ষকদের পক্ষ থেকে, এনটিআরসিএ এর সকল কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

নিবন্ধিত প্রার্থীদের নেতা হাবিবুল্লাহ রাজু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ধৈর্য ধরতে ধরতে ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেছে। আর কোন ধৈর্য বা অপেক্ষা নয়। এখন পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে লক্ষাধিক বেকারের প্রাণের দাবি গণবিজ্ঞপ্তির ফল আদায়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হতে হবে। অমানবিক ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমরা চাই এনটিআরসিএ আর তামাশা না করুক, দ্রুত সময়ের মধ্যে ৫৪ হাজার বেকার ও পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়ে তাদের স্বচ্ছতা অব্যাহত রাখুক।

তৃতীয় দফায় ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে ৮৯ লাখের বেশি আবেদন গ্রহণ করেছে এনটিআরসিএ। এ ৫৪ হাজার ৩০৪টি পদের মধ্যে ৪৮ হাজার ১৯৯ টি এমপিওভুক্ত শূন্যপদ। ননএমপিও পদ আছ ৬ হাজার ১০৫ টি। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ টি এমপিও পদে রিট মামলায় অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027949810028076