অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ক্ষুধার্ত থাকতে হবে না

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবক্স হল পেরিয়ে স্টেশন বাজারে যেতে প্রথমেই চোখ পড়ে নান্দনিক হোটেলের দিকে। হোটেলে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত কিছু লিফলেট। সাসপেন্স মিল চালু রাখতে পারেন ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য, সাসপেন্স মিল আছে কি না খোঁজ করুন, অযথা ঋণ করবেন না ইত্যাদি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বাজারের নান্দনিক হোটেলে অসহায় ও ক্ষুধার্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সাসপেন্স মিল চালু করেছেন হোটেলটির মালিক বাবু কর্মকার। বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাসপেন্স মিলের উদ্ভাবক ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রা.)। মুসলিম খেলাফতের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য উন্নত দেশে তাদের রেস্তোরাঁগুলো এ পদ্ধতি চালু আছে। এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চালু হলো ‘সাসপেন্স মিল’।

সাসপেন্স মিল হলো, একজন খাবার খেয়ে বিল দেয়ার সময় আরেকজন মানুষের খাওয়ার মতো অতিরিক্ত আরেকটি মিলের টাকা হোটেল মালিকের কাছে রেখে দিতে পারেন। পরে ওই টাকায় আরেকজন খেতে পারবেন। কিন্তু তিনি জানতে, পারবেন না কার টাকায় তিনি খাচ্ছেন। বা দাতাও জানতে পারবেন না কার খাতে ব্যয় হলো তার টাকা। অনেক অসচ্ছল ব্যক্তি বুঝতে দেন না যে তিনি অর্থকষ্টে আছেন। লোক-লজ্জায় কারও কাছে বলতেও পারেন না। তাদের জন্য এই সাসপেন্স মিল। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, সাসপেন্স মিল কী সেটাই জানতাম না। যখন এর আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম তখন মনে হলো দোকান মালিককে ধন্যবাদ জানাই। এখানে শিক্ষার্থীরা হাত বাড়িয়ে দিলে ক্ষুধার্তরা একবেলা খাবার খেতে পারবেন। সবাইকে মানবিক এ কাজে এগিয়ে আসা উচিত।

এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, সাসপেন্স মিল সিস্টেম চালু নিঃসন্দেহে একটা ভালো উদ্যোগ। এ সিস্টেমের ফলে অসচ্ছল শিক্ষার্থী বা ক্ষুধার্ত ব্যক্তিরাও সাসপেন্স মিল খেতে পারবেন। তবে আমরা যারা সচ্ছল শিক্ষার্থী আছি নিজে খেয়ে কিছু অর্থ সাসপেন্স মিলের জন্য রেখে যাওয়া উচিত। আমার রেখে যাওয়া অর্থ অন্যের ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করবে।

হোটেল মালিক বাবু কর্মকার বলেন, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর চিন্তা থেকেই এমন উদ্যোগ নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনও অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা টাকার অভাবে পেটপুরে খেতে পারে না। তিনবেলার মধ্যে একবেলা খায় এমন শিক্ষার্থী অনেক দেখেছি তাদের জন্য এই সাসপেন্স মিল সিস্টেম চালু করেছি। একমাস হয়েছে এ সিস্টেম চালু করেছি। শিক্ষার্থীরা ভালো সাড়া দিচ্ছেন। আজকেও দুজন সাসপেন্স মিল খেয়েছে। সাড়া পেতে থাকলে এ সিস্টেম চালু রাখবেন বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026750564575195