দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জের তিনজন এসএসসি পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাডমিট কার্ড পাচ্ছেন না। তারা সবাই ভেদেরগঞ্জ হেড কোয়ার্টার সরকারি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। অ্যাডমিট-রেজিস্ট্রেশন কার্ড না পাওয়ায় এ তিন শিক্ষার্থীর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তাদের অ্যাডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড না পাওয়ার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
ওই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল গাইন পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে সিফাত মল্লিক, রায়হান ও মোহনা আক্তারের অ্যাডমিট কার্ড দিচ্ছেন না এ তিনজনের মধ্যে সিফাত ও রায়হান মানবিক বিভাগের ও মোহনা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিষয়টি জানিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা বোর্ড থেকে অ্যাডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
যদিও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বলছে, টেস্ট বা নির্বাচনী পরীক্ষায় খারাপ ফল করে এসএসসিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অনুমতি না পেলেও ওই তিন শিক্ষার্থী অবৈধভাবে ফরম পূরণ করেছেন। তাই তাদের ফরম পূরণ বাতিল করা হয়েছে।
অ্যাডমিট কার্ড না পাওয়া শিক্ষার্থী সিফাত মল্লিকের বাবা মো. ইকাবল মল্লিক (নূর মোহাম্মদ) দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অপর দুই শিক্ষার্থী রায়হান ও মোহনা আক্তারও তাদের আত্মীয়। প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত ফি দিয়ে ফরম পূরণ করার পরেও তারা রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাডমিট কার্ড পাননি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এমনটা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
যদিও সিফাত টেস্ট পরীক্ষায় কেমন ফল করেছে জানতে চাইলে বাবা মো. ইকাবল মল্লিক দাবি করেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় সিফাতের টেস্টের ফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। তিনি বোর্ড থেকে অ্যাডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড এ তিন শিক্ষার্থীকে দেয়ার আবেদনও জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম গাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই তিনজন শিক্ষার্থীই একাধিক বিষয়ে ফেল করে টেস্ট পরীক্ষায়। একজন বেশ কয়েকটি বিষয়ে ফেল করে। তাই তাদের ফরম পূরণের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে কারো মাধ্যমে তারা অবৈধভাবে ফরম পূরণ করে ফেলে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর আমি ভেদেরগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন ইউএনও ও স্কুলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন মহোদয়কে বিষয়টি জানাই। তরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তৎকালীন ইউএনও মহোদয় ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করে তাদের ফরম পূরণ বাতিল করিয়েছেন। তাই অন্য পরীক্ষার্থীদের মতো তাদের অ্যাডমিট কার্ড বা রেজিস্ট্রেশন কার্ড আসেনি।
ভেদেরগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন ইউএনও ও স্কুলটি সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বর্তমানে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে ফরম পূরণ করেছিলো। সে বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তাদের ফরম পূরণ বাতিল করতে শিক্ষা বোর্ডে আবেদন জানিয়ে তাদের ফরম পূরণ বাতিল করানো হয়েছে।