গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সিলেট রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজির বাড়িসহ দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে ঘরে থাকা পুলিশের ইউনিফর্ম, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে গেছে। গতকাল শনিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।
সিলেট রেঞ্জে কর্মরত অ্যাডিশনাল ডিআইজি আব্দুল জলিল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গতকাল শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে তাদের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের বাড়িতে ডাকাতরা হানা দেয়। ওই বাড়িতে তার বাবা ও মা বসবাস করেন। তারা দুজনেই হৃদরোগী। ডাকাতরা ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সংসার খরচের টাকা, তার ইউনিফর্ম ও মায়ের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়ে গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল জলিলের বাবা আব্দুল বাতেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শনিবার রাত খাবার খেয়ে ঘরে ঘুমিয়ে যাই। রাত একটার দিকে মুখে কালো মুখোশধারী ৭-৮ জনের ডাকাত দল মই ব্যবহার করে বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ভেতর ঢুকে গেটের তালা ভেঙে রাম দা ও ছুরি হাতে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকেই তাদের কয়েকজন আমাদের গলায় রাম দা ঠেকিয়ে ঘিরে রাখে, বাকিরা ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ও আমার ছেলে পুলিশ কর্মকর্তার দুই সেট ইউনিফর্ম নিয়ে যায়। সবার পরনে কালো রঙের গেঞ্জি, মুখে কালো মুখোশ ও হাফ প্যান্ট ছিল। তারা ঘর থেকে আড়াই ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
অপরদিকে, রাত সাড়ে তিনটার দিকে মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের ফয়সাল আহমেদের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। এসময় ওই বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা লুটে নেয় বলে জানিয়েছেন ফয়সাল আহমেদ।
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু মোল্ল্যা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শনিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারা পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ির পেছন দিয়েকাটা তারের বেড়া মই দিয়ে টপকে বাড়ির ভেতর ঢুকে। এরপর তারা আধ পাকা টিনসেড বারান্দায় থাকা থাই গ্লাস খুলে তালা কেটে আব্দুল বাতেনের শোবার ঘরে ৪-৫জন ছুরি, শাবল ও রড নিয়ে প্রবেশ করে। পরে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মালামাল লুটে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনা পরপরই ওই ডাকাতদল রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুই আড়াই কিলোমিটার দুরে ইন্দ্রপুর গ্রামের ফয়সালের বাড়িতে হানা দেয়। সেখানেও তারা নগদ টাকা ও মালামাল লুটে নিয়ে চলে যায়।তিনি আরও জানান, পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতি শেষে চলে যাওয়ার সময় পাশের আরেক বাড়িতে ডাকাতি করবে বলে জানিয়ে ডাকাতদল তাদের চিৎকার ও কাউকে ডাকাডাকি করতে নিষেধ করে। এরপর তারা রাত সাড়ে তিনটার দিকে ফয়সালের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটায়।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ডাকাতির ঘটনায় দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।