দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতারা। ঘটনার এক যুগ পরেও কেন বিচার চেয়ে আন্দোলন করতে হচ্ছে এ প্রশ্ন তুলে আর কত বছর অপেক্ষা করতে হবে তা জানতে চান তারা।
গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে সংগঠনটি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানান বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘তদন্তে যত দিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে, তাদের ততটুকু সময় দিতে হবে। সেটি যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’ আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ উল্লেখ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। আমরা ৫০ বছর অপেক্ষা করব না।’
ডিআরইউর দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি বলেন, ‘আমি মনে করি আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।’ ডিআরইউর সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমরা একই জায়গায় প্রতিবাদ করে আসছি সাগর-রুনির বিচার দাবিতে। কিছুদিন আগে আইনমন্ত্রী যা বলেছেন তাতে আমরা আরও বেশি মর্মাহত হয়েছি। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কারও কাছ থেকে এমন মন্তব্য আমরা আশা করি না।’
ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, ‘এখানে আইনমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে আপনাকে আপনার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
সমাবেশে বক্তারা জানান, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারের ফ্ল্যাটে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তখন তাদের পাঁচ বছরের ছেলেটিই শুধু ঘরে ছিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনে সরকারের ঘোষণা গড়াল ১২ বছরে, তারপরেও জানা গেল না কীভাবে নিজের ঘরে খুন হলেন এই সাংবাদিক দম্পতি। থানা পুলিশ থেকে তদন্তভার গিয়েছিল ডিবির হাতে, তাদের ব্যর্থতা স্বীকারের পর এক যুগ ধরে তদন্ত চালিয়ে আসছে র্যাব, কিন্তু এখনা কূলের সন্ধান পায়নি তারা। অভিযোগপত্র দিতে আদালতের কাছে ১০৭ বার সময় নেয়া হয়ে গেছে। বিচারপ্রক্রিয়া থমকে আছে। নিষ্ঠুর এ হত্যাকাণ্ড ও বিচারহীনতায় হতবাক গোটা জাতি।
ডিআরইউর সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাগর সরওয়ারের সাবেক সহকর্মী মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক রাশেদ আহমেদ, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, সিনিয়র সাংবাদিক আশিষ কুমার দে, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মোরসালীন নোমানী প্রমুখ।