বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কোনো রিটই দায়ের করা হয়নি। প্রক্রিয়া করা হয়েছে মাত্র। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে দুটি রিট করার কথা জানিয়ে বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সারজিস আলম।
আওয়ামী লীগের আমলে হওয়া তিনটি নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা ও রায় না হওয়া পর্যন্ত দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করার পর নিজের বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনের বিষয়টি সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিটটি দায়ের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের পর ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সারজিস আলম লেখেন, ‘দুটি রিট করেছি। আওয়ামী লীগের বিগত তিনটি নির্বাচনকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত সুবিধাগুলো কেনো ফিরিয়ে দেবে না সে বিষয়ে প্রথম রিট। এই মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত কেন তাদেরকে পলিটিক্যাল সকল অ্যাক্টিভিটি থেকে বিরত রাখা হবে না সে বিষয়ে দ্বিতীয় রিট।’
দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কিংবা নিবন্ধন নিষিদ্ধের কোনো কথা রিটে নেই বলেও পোস্টে জানান সারজিস আলম।
রিটকারীদের আইনজীবী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিমও সাংবাদিকদের রিট দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘রিটে সরাসরি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।’
আহসানুল করিম জানান, মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে পারে। এরপর বিকেলে এবি পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকরা বিষয়টি সারজিসের কাছে জানতে চান। এ সময় সারজিস জানান, এখনও কোনো রিট হয়নি। রিটের খসড়া তৈরি করা হয়েছে মাত্র।
রিটের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে সারজিস জানান, প্রক্রিয়া শেষে সমন্বয়করা গণমাধ্যমের সামনে আসবেন। সারজিস বলেন, ‘আমাদের রিটের কোথাও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিলের কথা নেই।’
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা একটি রিটের প্রসেস করছিলাম, সেখানে আওয়ামী লীগ ১৬ বছরে যে কোনো দলকে নষ্ট করতে যা যা করেছে, আমরা সেরকম কোনো কিছুর ভিত্তিতে যাবো না। তারা বিগত তিনটি যে নির্বাচন করেছে দেশের সব মানুষ সাক্ষ্য দেবে এগুলো ছিল প্রহসনের। তাহলে এগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করা উচিত। নির্বাচনের পর যারা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নিয়েছে সেগুলোও অবৈধ।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ সমন্বয়ক আরো বলেন, ‘আমরা একটি প্রাথমিক ড্রাফট করেছি। এই প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। কাল বা পরশু প্রক্রিয়া শেষ করে মিডিয়ার সামনে আমরা বলতাম। মিডিয়াতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চাওয়া হয়েছে। আমি বা হাসনাত আমরা কেউই এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলিনি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটা হয়তো কারো মাধ্যমে সাইডটক হয়ে মিডিয়ায় গিয়েছে।’
যে কোনো তথ্য প্রচারের আগে গণমাধ্যমকে যাচাই করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘হয়তো আগামীকাল রিটের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমরা ভাবছি, দুটি বিষয় মিলিয়ে একটি রিট করা যায় কিনা। আইনজীবীদের সাথেও কথা বলেছি। রিট আমরা অবশ্যই করব। কাল বা পরশু আমরা জানিয়ে দেবো। মূল কথা জানালেই সব বিভ্রান্তি দূর হবে।’