আজহা না আদহা?

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

কোরবানির ঈদকে বাংলা ভাষায় সবসময় ঈদ-উল আজহা বলা হয়ে আসলেও সম্প্রতি মানুষের মধ্যে আজহা'র স্থলে আদহা ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে।

বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে, গল্প-উপন্যাসে, সরকারিভাবে কোরবানির ঈদ নির্দেশ করতে ঈদ-উল আজহাই ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে আজহা'র বদলে আদহা'র ব্যবহার জনপ্রিয়তা পেয়েছে অনানুষ্ঠানিকভাবে।

বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আজহা'র চেয়ে আদহা'র ব্যবহার করতেই বেশি দেখা যাচ্ছে মানুষকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন,  আরবি থেকে বাংলায় পরিবর্তন করার সময় উচ্চারণের পার্থক্যের কারণে এই শব্দটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, আরবিতে শব্দটি দোয়াদ বর্ণ ব্যবহার করে যেভাবে লেখা হয়, সেই হিসেবে উচ্চারণটা আদহা হওয়ার কথা - অর্থাৎ 'জ' না হয়ে অনেকটা 'দ' এর মত উচ্চারণ হওয়া উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আবহমান কাল থেকে আজহা শব্দটির ব্যবহারই হয়ে এসেছে।

এর পেছনের কারণ হিসেবে আবদুল কাদির বলেন, বাংলাদেশে আরবি ভাষার কোনো শব্দ উচ্চারণের সময় দোয়াদ বর্ণটির ক্ষেত্রে 'দ' ব্যবহার না করে 'জ' বা 'য' ব্যবহার করার প্রচলন ছিলো। ভাষাগত হিসেবে আরবি দোয়াদ বর্ণটির উচ্চারণের ক্ষেত্রে 'জ' না হয়ে 'দ' ব্যবহার করাই উচিত। তবে বাংলাদেশে যেহেতু বর্ণটির উচ্চারণের ক্ষেত্রে 'জ' এর ব্যবহার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত, তাই সেভাবেই এটি সবসময় লেখা এবং উচ্চারণ করা হয়েছে।

এছাড়া আরবি থেকে বাংলায় প্রতি বর্ণায়নের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতাও এই শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আরবির প্রতি বর্ণায়ন এখন পর্যন্ত কেউ নির্দিষ্ট করে নাই। বাংলা একাডেমি করেছে একভাবে, আবার ইসলামিক ফাউন্ডেশন করেছে আরেকভাবে। আবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পুরনো প্রতি বর্ণায়নের সাথে নতুনটির কোনো মিল নেই। ভাষার পণ্ডিতরাই যেহেতু এই বিষয়গুলো নিয়ে একমত হতে পারেননি, তখন কোনো একটিকে ভুল বলা উচিত হবে না।

আদহা বা আজহা শব্দটি নিয়ে এই বিভ্রান্তির মত একই ধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে রোজার মাসের নাম নিয়ে। রোজার মাসের নাম আসলে রমজান নাকি রামাদান, সেটি নিয়ে কয়েকবছর আগে ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ বিতর্কই তৈরি হয়েছিল।

ভাষাবিদরা মনে করেন আরবি ভাষায় উচ্চারণ অনুযায়ী শব্দটি রামাদান উচ্চারণ করা উচিত, তবে উপমহাদেশে ইসলামের প্রসার শুরুতে ফার্সি ভাবধারায় প্রভাবিত ছিল বলে ঐ শব্দটির উচ্চারণে পরিবর্তন হয়েছে। ফার্সিতে শব্দটির উচ্চারণ রমজান। তেমনি উর্দু ভাষাতেও মূল শব্দটি আসলে রমজান। (বিবিসি অবলম্বনে)


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা শূন্যপদে বদলির দাবিতে শিক্ষকদের লংমার্চ - dainik shiksha শূন্যপদে বদলির দাবিতে শিক্ষকদের লংমার্চ শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল - dainik shiksha শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল শিক্ষাঙ্গনের ভদ্রতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাঙ্গনের ভদ্রতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা জাতীয়করণের দাবিতে সপ্তম দিনের অবস্থান ধর্মঘটে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা - dainik shiksha জাতীয়করণের দাবিতে সপ্তম দিনের অবস্থান ধর্মঘটে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা এখনো ট্রমার মধ্যে - dainik shiksha খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা এখনো ট্রমার মধ্যে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের - dainik shiksha গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027949810028076