জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ২০১৬ সালে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বিতীয় এনআইডি কার্ড তৈরি করেন। ওই এনআইডি কার্ডে তার আসল জন্ম তারিখ ১৯৭৬ সালের ২ ডিসেম্বর এর পরিবর্তে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর করেন। এ জালিয়াতির বিষয়টি মামলার তদন্তে বের হয়ে এসেছে।
তদন্তে দেখা গেছে, সাবরিনা ১৯৯১ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। অর্থাৎ তার জন্ম ১৯৮৩ সালে হলে মাত্র ৮ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেছেন তিনি! এছাড়া ২০০০ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন সাবরিনা। অর্থাৎ মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি এমবিবিএস পাস করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাবরিনার বিরুদ্ধে এনআইডি জালিয়াতির মামলায় গত সপ্তাহে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক রিপন উদ্দিন। এতে সাবরিনার মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি কার্ড করার বিষয়টি উঠে এসেছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিটে বলা হয়, সাবরিনা বয়স কমিয়ে জালিয়াতির উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় টিআইএন নম্বরপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং প্রতারণামূলকভাবে দ্বিতীয় এনআইডি খাঁটি দলিল হিসেবে তার অফিসে এইচআরআইএস এ ব্যবহার করে পিআরএলের সময় বৃদ্ধি করায় পেনাল কোডের ৪৬৫/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অপরাধ করেছেন। গতকাল শনিবার আদালতে বাড্ডা থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রণপ কুমার চার্জশিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ২২ ডিসেম্বর ধার্য রয়েছে।
এর আগে জালিয়াতির সন্দেহে ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সাবরিনার নামে দুটি এনআইডি কার্ড সক্রিয়।
দুদক বিষয়টি টের পেয়ে বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য চায়। সাবরিনা ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন। তিনি প্রথমে ভোটার হন সাবরীনা শারমিন হোসেন নামে। একটিতে জন্ম তারিখ ১৯৭৬ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। প্রথমটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর এইচ হক। আর দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয় আরিফুল চৌধুরী।উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামীসহ ৮ আসামির ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় তারা কারাগারে রয়েছেন।