আতঙ্কে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে মঙ্গলবার সারাদেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রংপুরে ছয়জন নিহত হন। এ অবস্থায় আতঙ্কে হল ছাড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, চলমান কোটা ইস্যু নিয়ে গতকাল সারাদেশে ছয়জন নিহতের খবরে জীবনের অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। বাড়ি থেকে অভিভাবকরা বারবার ফোন করে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলছেন। তাই আবাসিক হল ছেড়ে বাড়ি অথবা নিকটাত্মীয়ের বাসায় উঠবেন তারা।

এদিকে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ১১টার দিকে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে সই করেছেন ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান।

বুধবার (১৭ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছাড়া শুরু করেছেন।

মঙ্গলবারের সংঘর্ষে সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সবুজ আলী নিহত হয়েছেন। দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ শনাক্ত হয়। ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের সহপাঠীদের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে আজ ভোর থেকে হল ছাড়তে শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রামিম বলেন, ক্যাম্পাসের অবস্থা ভালো না। বাড়ি থেকে বাবা-মা বারবার ফোন দিচ্ছে। তাই ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। পরিস্থিতি ভালো হলে তারপর হলে আসবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী খোরশেদ বলেন, ক্যাম্পাসে এভাবে থাকা যায় না। কখন কী হয় বলা মুশকিল। মাঝে মধ্যেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। আপাতত ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছি। দু’একদিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে আসবো। না হলে বাড়ি চলে যাবো।

এদিকে ভোর থেকেই ঢাকা কলেজের অধিকাংশ হল থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী তানজিল বলেন, গতকালের সংঘর্ষে কলেজের এক বড় ভাই মারা গেছেন। এখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই। বাধ্য হয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি।

ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী বলেন, বাড়ি যাচ্ছি, এত ঝামেলার মধ্যে থাকা ঠিক হবে না। ক্যাম্পাস ও আশপাশের অবস্থা কখন কী হয় বলা যাচ্ছে না। নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে ভোরেই বের হয়েছি।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে রোকেয়া হল, সুফিয়া কামাল, হাজী মুহম্মদ মহসীন হলসহ কয়েকটি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে কোটা সংস্কার ও ছাত্রলীগের ছামলার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন। চলমান পরিস্থিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি প্রবেশমুখে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে পরিচয়পত্র যাচাইসহ পুলিশকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম সংস্কার চেয়ে হাইকোর্টে রিট - dainik shiksha মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম সংস্কার চেয়ে হাইকোর্টে রিট যোগদান থেকেই বেতন পাবেন যেসব শিক্ষক - dainik shiksha যোগদান থেকেই বেতন পাবেন যেসব শিক্ষক যোগদান থেকেই বেতন পাবেন যেসব শিক্ষক - dainik shiksha যোগদান থেকেই বেতন পাবেন যেসব শিক্ষক আসামে বসে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ‘ভারত বিরোধী’ পোস্ট, যে পদক্ষেপ নিলো কর্তৃপক্ষ - dainik shiksha আসামে বসে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ‘ভারত বিরোধী’ পোস্ট, যে পদক্ষেপ নিলো কর্তৃপক্ষ গণহত্যার মদদদাতাদের দাপটে স্থবির বাউবি - dainik shiksha গণহত্যার মদদদাতাদের দাপটে স্থবির বাউবি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003277063369751