রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত মাসে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন ডা. বেগম মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলি। এরপর ২৫ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য ৫ জুলাই দিন ঠিক করেন। গত ৫ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাকে জামিন না দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী চিকিৎসক আঁখির সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জটিলতা দেখা দেওয়ায় নবজাতককে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একই সঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পরে ১০ জুন বিকেলে আঁখির নবজাতক সন্তান মারা যায়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও।