ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হক যদি মানসিক রোগী হয়ে থাকেন তাহলে তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হবে। আর যদি মানসিক রোগী না হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ডিবি প্রধান বলেন, হঠাৎ করে ফেসবুক লাইভে এসে আদম তমিজী হক বলা শুরু করলেন, তার মা হাফ ইসরায়েল এবং তিনি ইসরায়েল সরকারকে আহ্বান করলেন তাকে উদ্ধার করার জন্য। আবার তিনি আমেরিকান মেরিন সেনাদের আহ্বান করেন বাংলাদেশ তাকে আটকে রাখা হয়েছে, তাকে উদ্ধার করতে।
হারুন অর রশীদ বলেন, তাকে যদি সরকার গ্রেফতারই করতো তাহলে তমিজী হক যখন এয়ারপোর্ট দিয়ে দেশে প্রবেশ করলেন তখনই তাকে আটকাতে পারতাম। কিন্তু দেখা গেলো এয়ারপোর্ট দিয়ে এসে পাগলামি শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয় তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট তিনি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে স্যোশাল মিডিয়াতে দেখাচ্ছেন। যে দেশে তার শিল্প কারখানা রয়েছে, তা দিয়ে তিনি চলেন, সেই দেশের পাসপোর্ট তিনি পুড়িয়ে ফেললেন। আমি মনে করি এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।
হারুন অর রশীদ বলেন, আদম তমিজী হক সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য বলেছেন নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে বলেছেন- তা তদন্ত করে বের করবো। যদি মনে হয় তার রিহ্যাবে পাঠানো দরকার তাহলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।
সবকিছু মিলিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি। আমরা তার কাছে জানতে চাইবো- কেন তিনি সরকারের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ও পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলে আনন্দ উল্লাস করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে মামলাও আছে।
গত সেপ্টেম্বরে ফেসবুক লাইভে নিজের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে এবং নিজ দল আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তমিজী হক। পরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আদম তমিজী বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক।
এরপর গত ১৩ নভেম্বর রাত ১২টায় ঢাকায় ফেরেন আদম তমিজী। পরে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগে ১৫ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আদম তমিজী হক ইচ্ছাকৃতভাবে তার কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর, মানহানিকর, উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
গত ১৬ নভেম্বর রাতে তার বাড়িতে যায় র্যাব সদস্যরা। এ সময় তাকে গ্রেফতার করতে গেলে আত্মহত্যার হুমকি দেনি। পরে র্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেফতার না করে চলে যায়।