আধ ডজন নির্বাচনী ইশতেহারে শিক্ষা প্রসঙ্গ : মুহম্মদ জাফর ইকবাল

মুহম্মদ জাফর ইকবাল |

একটি সময় ছিল যখন নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আমি মাথা ঘামাতাম না। আমি ধরেই নিয়েছিলাম একটা রাজনৈতিক দল পারুক আর নাই পারুক ইশতেহারে অনেক ভালো ভালো কথা লিখে রাখবে। ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো নিয়ে কেউ আর মাথা ঘামাবে না। দেশটির এত রকম সমস্যা, এখানে কোনোমতে টিকে থাকাই বিরাট সাফল্য।

আমি নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে প্রথমবার কৌতূহলী হয়েছিলাম ২০০৯ সালের নির্বাচনের আগে। সেই নির্বাচনের ইশতেহারে আওয়ামী লীগ কথা দিয়েছিল— যদি তারা ক্ষমতায় যায় তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল এবং সত্যি সত্যি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। সেই বিচারকে থামানোর জন্যে এই দেশে যে তাণ্ডব শুরু হয়েছিল— দেশের মানুষের সেটি নিশ্চয়ই মনে আছে। শেখ হাসিনা সরকারের সেই বিচার প্রক্রিয়ার পক্ষে জনমত তৈরি করার জন্যে তখন গণজাগরণ মঞ্চের জন্ম হয়েছিল এবং দেখতে দেখতে সেটি সারা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। গণজাগরণ মঞ্চ কিংবা তার নেতত্বে থাকা তরুণদের বর্তমান অবস্থা যাই হোক না কেন, ২০১৩ সালের সেই আন্দোলনের স্মৃতি এই দেশের তরুণদের বুকের মাঝে সারা জীবন একটি আনন্দময় স্মৃতি হিসেবে বেঁচে থাকবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে থামানোর জন্য জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি যে ভয়ঙ্কর তাণ্ডব শুরু করেছিল এবং শেখ হাসিনা যেভাবে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, তার কোনো তুলনা নেই। এই দেশে শুধু যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে তা নয়, সেই বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। আমাদের স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল (হুমায়ূন আহমেদের ভাষায় গোল্ড ফিশের মতো), তাই আমাদের নিশ্চয়ই মনে নেই, আমরা কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারিনি সত্যি সত্যি এই দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশকে গ্লানিমুক্ত করা সম্ভব হবে। আমরা বরং উল্টোটাই দেখেছিলাম, গর্ত থেকে বের হয়ে তারা প্রকাশ্যে এসেছে এবং এক সময় বিএনপি’র ঘাড়ে চেপে ক্ষমতা দখল করেছে। কাজেই এই দেশের অন্য মানুষের মনোভাব কী আমি জানি না আমি সবসময়েই উচ্চকণ্ঠে বলে থাকি, এই জীবনে আমার আর চাইবার কিছু নেই।

সেই থেকে আমি নির্বাচনী ইশতেহার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ি। কারণ আমি আমার জীবনে অন্তত একবার দেখেছি, একটি রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে একটি ঐতিহাসিক অঙ্গীকার করেছিল এবং সেই অঙ্গীকারটি রক্ষা করেছিল।

এই বছর আমি সব মিলিয়ে ছয়টি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার পড়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো হচ্ছে— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ছয় নম্বর নির্বাচনী ইশতেহারটি নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের নয়, সেটি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। এই নির্বাচনী ইশতেহারগুলো সবাই নিজের মতো করে পড়ে, যে যেটা নিয়ে বেশি আগ্রহী সে সেটাই খুঁজে বেড়ায়। এটা আমার জন্যেও সত্যি, তবে আমি যেহেতু শিক্ষক মানুষ— আমি নিজের অজান্তেই কে কতটুকু খাটাখাটনি করে, কত যত্ন করে আন্তরিকতা নিয়ে লিখেছে মনে মনে সে জন্যে সবাইকে একটা গ্রেড দিয়ে রেখেছি!

সিপিবি’র নির্বাচনী ইশতেহারটি দেখে আমি এক ধরনের আনন্দ পেয়েছি। কারণ এই ইশতেহারটির নাম ‘ভিশন-মুক্তিযুদ্ধ ৭১’। এটি চার পৃষ্ঠার ছোট একটি ইশতেহার, সব মিলিয়ে ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গীকার করা আছে। বামপন্থি রাজনৈতিক দলের ইশতেহার যেরকম হওয়ার কথা এটি সেরকম একটি ইশতেহার। শিক্ষক হিসেবে আলাদাভাবে আমার পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি চোখে পড়েছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয় ছাত্রছাত্রী অভিভাবক শিক্ষক সবাই আজকাল কাতরভাবে এর থেকে মুক্তি চায়। এত ছোট শিশুদের ওপর এরকম একটা পরীক্ষা চাপিয়ে দিয়ে যেটুকু লাভ হয়েছে, ক্ষতি হয়েছে তার থেকে বেশি।

ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারটিও বামপন্থি রাজনৈতিক দলের ইশতেহারের মতো। তবে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষের রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রবলভাবে বিশ্বাসী। এটি ২৩ পৃষ্ঠার ইশতেহার, এখানে ১৩টি লক্ষ্য এবং ২১টি কর্মসূচি আছে। তারা খুব স্পষ্টভাবে বলেছে যে এই দেশে কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থাকতে পারবে না। ওয়ার্কার্স পার্টি অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কথা বলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় এদেশের ছেলেমেয়েদের যত কষ্ট হয়— সেটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এক মুহূর্তে শেষ করে দেওয়া যায়, তারপরেও এটি এই দেশে ঘটছে না। আমি দেখে খুশি হয়েছি যে বিষয়টি ধীরে ধীরে একটা জাতীয় দাবিতে রূপ নিয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারের আরেকটা বিষয় আমার আলাদাভাবে চোখে পড়েছে। সেটি হচ্ছে— তারা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্যে আলাদা কোটা রাখার পক্ষপাতী। আমাদের সবারই নিশ্চয়ই মনে আছে এই দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কোটাবিরোধী বিশাল একটা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা রাজাকারদের পুনর্বাসনে লেগে গিয়েছিল, বুকে ‘আমি রাজাকার’ লিখে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবির কথা আমি কখনো ভুলতে পারি না।

জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারটি আট পৃষ্ঠার। এখানে সব মিলিয়ে ১৮টি কর্মসূচি আছে। সবগুলো ইশতেহারের মাঝে এটি সবচেয়ে দুর্বল ইশতেহার, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েও এর মাঝে আলাদা করে বলার মতো বাস্তব কোনো পরিকল্পনা আমার চোখে পড়ল না। আমার কোনো ছাত্র এই ইশতেহার লিখে আনলে আমি তাকে পাস মার্ক দিতাম কী না সন্দেহ। এর মাঝে সবচেয়ে দর্শনীয় হচ্ছে, ইশতেহারের প্রচ্ছদে ‘পল্লীবন্ধু’ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিশাল একটি ছবি এবং আটটি প্রদেশের প্রস্তাবিত নাম (যেমন জাহানাবাদ প্রদেশ, চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশ ইত্যাদি!)

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারটি যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক। প্রথমত, এটি বেশ কয়েকটি ছোট-বড় রাজনৈতিক দলকে নিয়ে তৈরি হয়েছে। কাজেই আমরা ধরেই নিয়েছি এই নির্বাচন ইশতেহারটি ছোট-বড় সবগুলো রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত একটি ইশতেহার। কিন্তু এই ইশতেহারটি ঘোষণা করার পরদিন বিএনপি আলাদাভাবে তাদের ইশতেহার দিয়েছে। কাজেই আমাদেরকে ধরে নিতেই হবে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারটি কয়েকটি খুবই ছোট ছোট গুরুত্বহীন রাজনৈতিক দলের ইশতেহার। সেই হিসেবে আমি যদি এই ইশতেহারটি নিয়ে কিছু না বলি কেউ নিশ্চয়ই কিছু মনে করবে না। কিন্তু আমি এটা নিয়ে কয়েকটি কথা বলতে চাই। কারণ এর মাঝে মজার কয়েকটি বিষয় আছে। আজকাল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল কিংবা বিপক্ষের দল যাই হোক না কেন, সবাইকেই মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কিছু ভালো ভালো কথা বলতে হয়। সেই হিসেবে এই ইশতেহারেও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কিছু ভালো ভালো কথা আছে এবং শেষে এক জায়গায় লেখা আছে “মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার চেতনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলা হবে।” আমি এই প্রথমবার “সত্যিকার চেতনা” কথাটি দেখছি, যার অর্থ নিশ্চয়ই এক ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আছে যেটি সত্যিকার নয়, যেটি মিথ্যা, যেটি ভুল! সেটি কী আমার জানার খুবই কৌতূহল। এই দেশের অনেক মানুষের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের এক ধরনের চেতনা আছে। সেটি সত্যিকারের চেতনা নাকি মিথ্যা চেতনা? এটি যাচাই করার পদ্ধতিটি কী? কে এর দায়িত্ব নিয়েছে?

সব ইশতেহারের মাঝেই ডিজিটাল প্রযুক্তি নিয়ে কথাবার্তা থাকে, এই ইশতেহারেও আছে। শেষে এক জায়গায় লেখা আছে, “সঠিক কক্ষপথে নতুন স্যাটেলাইট প্রেরণ করা হবে!” এটি পড়ে আমি হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না। জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইটের কক্ষপথ নির্দিষ্ট, সেই কক্ষপথে স্যাটেলাইট বসালে পৃথিবীর নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সার্বক্ষণিকভাবে স্যাটেলাইটটাকে দেখা যায়। এই কক্ষপথে অসংখ্য স্যাটেলাইট বসানো আছে, যেগুলো পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ক্লাশ নাইনে পড়া একটি ছেলে বা মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে সেও হিসাব করে এই কক্ষপথের ব্যাসার্ধ বের করে ফেলতে পারে। এখানে সঠিক বা বেঠিক কক্ষপথ বলে কিছু নেই, একটিই কক্ষপথ!

এই ইশতেহারের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ হচ্ছে তার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পরিকল্পনা। টানা চার পৃষ্ঠাব্যাপী এই পরিকল্পনাগুলো যথেষ্ট ব্যাপক। অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এরকম খুঁটিনাটি সহ স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পরিকল্পনা দিতে পারেনি। এই ইশতেহারে শিক্ষাসংক্রান্ত অনেক পরিকল্পনা দেওয়া আছে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এর বেশির ভাগ তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা ২০১৮ থেকে নেওয়া। তারুণ্যের ইশতেহার হচ্ছে কোটাবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীদের ইশতেহার। কাজেই স্বীকার করে নিতেই হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক নেতাদের নিজেদের শিক্ষা নিয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই, তাদের শিক্ষাসংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলো ছাত্রছাত্রীদের থেকে নিতে হয়েছে। অথচ যেকোনো বিবেচনায় একটা জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শিক্ষা।

তবে এই ইশতেহারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাক্যটি হচ্ছে: “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে।” আমাকে স্বীকার করতেই হবে ইশতেহারের এই বাক্যটি আমাকে খুবই আনন্দ দিয়েছে। আমি সব সময়ই আশা করে এসেছি দেশের সব রাজনৈতিক দল হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রায় ৩০ পৃষ্ঠার ইশতেহারের তুলনায় বিএনপি’র ৯ পৃষ্ঠার ইশতেহারটি যথেষ্ট ছোট। আমার ধারণা যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের ইশতেহারে ঘোষণা করে ফেলেছে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়া হবে, তখন বিএনপি তাড়াহুড়ো করে নতুন একটি ইশতেহার দাঁড় করিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীকে সন্তুষ্ট করার জন্য সেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-সংক্রান্ত কোনো কথা নেই। বিএনপি’র নির্বাচনী ইশতেহারটি মোটামুটি সাদামাটা, একটি ইশতেহারে গত্ বাঁধা যে জিনিসগুলো থাকতে হয়, মোটামুটি সেগুলোই আছে। তবে শিক্ষাখাতে জিডিপির পাঁচ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হবে ঘোষণাটি দেখে যথেষ্ট খুশি হয়েছি। এই ইশতেহারেও পি.এস.সি এবং জে.এস.সি বাতিল করার কথা বলা হয়েছে।

আমি যতগুলো ইশতেহার পড়েছি তার মধ্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ ইশতেহারটি এসেছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। ৮৪ পৃষ্ঠার এই ইশতেহারটি যথেষ্ট সুলিখিত। (আমার কোনো একজন ছাত্র এরকম একটি ইশতেহার লিখে আনতে পারলে তাকে নিশ্চিতভাবে এ প্লাস গ্রেড দিতাম!) এটি শুধু যে গুছিয়ে লেখা হয়েছে তা নয়, এটি শেষ করা হয়েছে সুকান্তের একটি কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে। শুধু তাই নয়, এটি একমাত্র ইশতেহার যেখানে বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য গ্রাফ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইশতেহারের প্রত্যেকটি অঙ্গীকার লেখার আগে এই সরকার গত দশ বছরে এই বিষয়ে কী কী কাজ করেছে সেটি লিখে দিয়েছে। ভবিষ্যতের অঙ্গীকার নিয়ে কারো মনে দ্বিধা থাকলেও অতীতের অর্জন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।

এই ইশতেহারে অসংখ্য পরিকল্পনার কথা দেওয়া আছে। যথেষ্ট খুঁটিনাটির কথা বলা আছে। শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বাজেট দেওয়ার অঙ্গীকার করা আছে। তথ্যপ্রযুক্তির কথা বলার সময় সেখানে “ব্লক চেইন” শব্দটির ব্যবহার দেখে আমি যথেষ্ট চমত্কৃত হয়েছি, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করা নিয়ে বক্তব্যটি আমাকে যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছে। আমার মনে আছে একটি সময় ছিল যখন আমি একা এটা নিয়ে চিত্কার করে গিয়েছিলাম, কেউ আমার কথাকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন সব রাজনৈতিক দল প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছে।

নির্বাচনী ইশতেহারে আমি যা যা চাই তার প্রায় সবকিছুই আমি এই ইশতেহারে খুঁজে পেয়েছি। ঢাকা শহরের দূষণমুক্ত বাতাস কিংবা কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে কেয়ার, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই, কিংবা গবেষণার জন্য বাড়তি ফান্ড এরকম সব কিছুই আছে। শুধু যদি সাইকেলের আলাদা লেন এবং সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি পেতাম তাহলে আমার ভেতরে কোনো অতৃপ্তি থাকত না।

এই ইশতেহারগুলো পড়ার সময় একটি বিষয় পড়ে আমি আমার স্ত্রীকে ডেকে বলেছি, “শুনে যাও। আমাদের আর কোনো চিন্তা নেই। আমাদের বয়স পঁয়ষট্টি হয়ে গেছে এখন আমরা বিনামূল্যে চিকিত্সা পাব!”

নির্বাচনী ইশতেহার পড়ার মাঝে এত আনন্দ কে জানত?

লেখক :শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035820007324219