দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরিশাল অফিস : বছরের পর বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতি ও অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকা আনোয়ার হোসেন এবার তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন মর্মে অভিযাগ উঠেছে। আনোয়ার হোসেন মূলত জেলা শিক্ষা অফিসার কিন্তু তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল আঞ্চলিক অফিসের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব দিয়ে রাখে কয়েক বছর ধরে। এমন অভিযোগের পর আনোয়ার হোসেনকে অপসারণ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। প্রথমে তাকে ঢাকায় মাউশি অধিদপ্তরের প্রধান অফিসে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, গত ৩০ মার্চ ‘আনোয়ারের অনিয়মে বেতন-ভাতা বঞ্চিত বরিশালে ১৫০০ শিক্ষক’ -এই শিরোনামে দৈনিক শিক্ষাডটকমে রিপোর্টের পর বরিশালের ডিডি আনোয়ার হোসেনের কাছে ব্যাখ্যা চায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
কিন্তু ওই ব্যাখ্যায় আনোয়ার হোসেন তার বস মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছেন। দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর হাতে আসা ওই ব্যাখ্যায় আনোয়ার নলছিটি ও ভান্ডারিয়াসহ কয়েকজনের অভিযোগ সত্য নয় মর্মে দাবি করেছেন।
আরো পড়ুন : শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ কেলেঙ্কারি ও সাংবাদিকের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড
জানা যায়, গত ৩০ মার্চ দেশের একমাত্র শিক্ষাবিষয়ক ডিজিটাল পত্রিকা ‘দৈনিক শিক্ষাডটকম’ ও দেশের একমাত্র শিক্ষা বিষয়ক প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’য় ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনের প্রেক্ষিতে খবর প্রকাশ হয়।
পরে খবরটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নজরে আসলে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়ে ওই কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হয়।
প্রকাশিত খবরে, আনোয়ার হোসেনের নানা অনিয়মের কারণে বিভাগের ৬০০ বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫০০ শিক্ষক বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগের কথা বলা হয়।
আনোয়ার হোসেন শিক্ষকদের ফাইলগুলো দিনের পর দিন আটকে রাখেন। এমনকি তুচ্ছ কারণে ফাইলগুলো বাতিল করে দেন। এর ফলে এ বিভাগের হাইস্কুলের শিক্ষকেরা চাকরি করলেও এমপিওভুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমপিও বঞ্চিত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী বিভাগীয় প্রতিরোধ কমিটি।
এমপিও বঞ্চিত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী বিভাগীয় প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক আবদুল জববার খান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন শিক্ষকদের এই ফাইলগুলো দিনের পর দিন আটকে রাখেন, এমনকি তুচ্ছ কারণে ফাইলগুলো বাতিল করে দেয়া হয়। এর ফলে হাইস্কুলের এই শিক্ষকরা চাকরি করলেও এমপিও থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
গত ৫ দিন ধরে উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।