আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইউএনডিপির ‘ইউএন বাংলা ফন্ট’ চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘ইউএন বাংলা ফন্ট’ নামে নতুন একটি বাংলা ফন্ট চালু করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ওই ফন্ট উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে দিবসটি উপলক্ষে বাংলায় মানব উন্নয়ন সূচক-২০১৯-এর প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন) প্রতিবেদনটি বাংলায় প্রকাশিত হওয়ার ফলে অনেক মানুষ এটি পড়তে পারবে এবং উপকৃত হবে। এই প্রতিবেদনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য আছে। তা হলো—নিম্ন আয়ের ঘরে একটি শিশু জন্মালে তার গড় আয়ু হবে ৫৯ দশমিক ৪ বছর। আর উচ্চ আয়ের ঘরে জন্মালে ওই শিশুর গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়াবে ৭৮ দশমিক ৪ বছর। কী ধরনের বৈষম্য থাকলে জন্ম থেকেই নিম্ন ও উচ্চ আয়ের মধ্যে বৈষম্য শুরু হয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজির সফল বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রতি বছর আমাদের পাঁচ থেকে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এটি কোনো কৌতুক নয়। কারণ বর্তমানে উন্নয়ন সহযোগীরা গড়ে মাত্র ১৫৬ বিলিয়ন ডলার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দিয়ে থাকে। এলপিসি থেকে মাত্র ৩৮ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। আমরা যদি সর্বনিম্ন পাঁচ ট্রিলিয়নের কথাই ধরি তাহলে ওই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র দশমিক ৮ শতাংশ। তা হলে বাকি ৯৯ শতাংশ কীভাবে আসবে? সেটি অনেক বড় একটি ইস্যু।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী যে ইউএনডিপি কিছু অর্থ সাহায্য নিয়ে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি এই অর্থের জোগান দেয়া অনেক চ্যালেঞ্জের। এ জন্য আমরা পার্টনারশিপের দিকে জোর দিচ্ছি। বিজনেস সেক্টর, প্রাইভেট সেক্টর, শিক্ষা, এনজিও থেকে শুরু করে সরকারের সঙ্গে সরকারের খুবই শক্তিশালী পার্টনারশিপ দরকার।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের এসডিজি অর্জনে আগামী ১০ বছরে ৯৪৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এই বিশাল পরিমাণ অর্থ আমরা কোথা থেকে পাব? এর জোগান দেয়া এতটাও সহজ কাজ হবে না। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই বিশাল অর্থের ৪২ শতাংশ আসবে সরকারি ফান্ড থেকে। বাকি ৫০ শতাংশেরও ওপরে আসবে বেসরকারি সেক্টর থেকে। তাই প্রাইভেট সেক্টরের অংশীদারির কোনো বিকল্প নেই। আশার কথা হলো—বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর অনেক ভালো করছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটি দেশে প্রধানত দুটি বড় সম্পদ আছে। একটি হলো পানি আর একটি মানবসম্পদ। আমাদের দেশের মানুষ খুবই পরিশ্রমী ও বুদ্ধিমান। সরকার এই মানবসম্পদকে কাজে লাগাতে পরিকল্পনা হতে নিয়েছে। আমরা ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সব এসডিজি অর্জন করতে চাই।’

ইউএনডিপির সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমাদের ইউএনডিপির সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের অনেক বড় মানবসম্পদ আছে যারা শিক্ষিত। আমাদের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশ মানুষই ২৫ বছরের নিচে। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই যুবক। কিন্তু এই মানুষগুলোকে যথাযথভাবে প্রশিক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এই জায়াগাটিতে ইউএনডিপি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।’

ওই সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কান্নি উইগনারাজা, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সারসংক্ষেপ বাংলায় রচনাকারী ড. সেলিম জাহান প্রমুখ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030200481414795