কোটা সংস্কারআন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কাঙ্ক্ষিত নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। গতকাল শনিবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে, তা মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের সঙ্গে যায় না। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-অসন্তোষ দূর না করে দমন-পীড়নের পথে হাঁটলে তা ভালো পরিণতির দিকে যায় না। কোটা সংস্কারের বিষয়ে অবস্থান স্বচ্ছ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের ব্যানারে 'মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার :কোন পথে বাংলাদেশ?' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। মানবাধিকার কর্মী খুশী কবিরের সঞ্চালনায় এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইনজীবী রফিক আহমেদ সিরাজী। তিনি বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে প্রশাসন, পুলিশ এবং ছাত্রলীগের নিপীড়কের ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হতো না। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও নিপীড়নে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, শিক্ষাবিদ এএন রাশেদা, অধ্যাপক আমেনা মহসিন, অধ্যাপক মালেকা বেগম, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া, সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের মা সালেহা বেগম, স্ত্রী রাবেয়া আলো প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, কোটা সংস্কার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাদ দিলে আদালত অবমাননা করা হবে। কিন্তু আপিল বিভাগ এটি নিয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন, কোনো রুল জারি করেননি। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে সবার সমান অধিকার থাকবে। কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিলে সরকারের 'গ্রহণযোগ্যতা বাড়ত' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা-মামলার সমালোচনা করে খুশী কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের বক্তব্য যখন কেউ শুনছে না, যখন তাদের অধিকারের দাবির ফয়সালা হচ্ছে না, তখন তারা রাস্তায় নেমে আসছে। সেটি আইনের পরিপন্থী নয়। সংবিধানে নাগরিকদের অভিন্ন অধিকারের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। 

সারা হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সরকার পক্ষ থেকে যা করা হচ্ছে তা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব যাদের ওপর দেওয়া হয়েছে তারাই উল্টো নিপীড়ন করছে। এসব সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের সঙ্গে যায় না।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানের মা সালেহা আক্তার ছেলের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। সালেহা আক্তারের দাবি- তার ছেলের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে আন্দোলন করার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক নয়। এমনকি তার ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সম্পৃক্ত নয় বলে দাবি করেন তিনি। 

রাশেদের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, রাশেদ সাধারণ একজন ছাত্র; কিন্তু আন্দোলনের পর তাকে বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। শিবির বলা হচ্ছে। একটা গণতান্ত্রিক দেশে যদি ন্যায়ের জন্য আন্দোলন করতে এসে এভাবে নিপীড়নের শিকার হতে হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কেউ যৌক্তিক দাবির জন্য আর রাস্তায় নামবে না। এ সময় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে 

তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান রাবেয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00313401222229