আন্দোলনের বিরুদ্ধে চবি ছাত্রী, সহপাঠীদের পরীক্ষা বর্জন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি |

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি পরীক্ষা দিতে আসায় পরীক্ষা বর্জন করেছেন বিভাগটির ৫৮তম ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের সমাপনীর ১০১ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিভাগটির সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট করতেন জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি। এজন্য আন্দোলনের পর তারা তাকে বয়কট করেছিলেন। এ ছাড়া মুন্নি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসবেন না বলে বিভাগকে অবগত করেছিলেন তারা। তবে পরবর্তীতে বিভাগের শিক্ষকদের অনুরোধে এবং মুন্নির ক্ষমা চাওয়া সাপেক্ষে পরীক্ষায় বসতে দিতে সম্মত হন ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা। কিন্তু মুন্নি ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা ১০১ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা বর্জন করেন।

 

এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রনি হোসেন বলেন, আমরা বিভাগের শিক্ষকদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম মুন্নি পরীক্ষায় বসলে আমরা পরীক্ষা বর্জন করব। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষকদের অনুরোধে এবং তার ক্ষমা চাওয়ার প্রেক্ষিতে পরীক্ষায় বসতে দিতে আমরা সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু সে কোনোভাবেই তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে রাজি না। এমনকি তার আচরণ এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ছিল যে, শিক্ষকরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও ক্ষমা চাইতে রাজি হননি। তাই আমরা ব্যাচের সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মুন্নি পরীক্ষায় বসলে আমরা কোনোভাবেই পরীক্ষা দেব না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি বলেন, আমি শুরু থেকেই কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে টিয়ারগ্যাসে আহতও হয়েছিলাম। হাইকোর্ট থেকে যখন কোটার রায় দেওয়া হয়, তখন আমি আন্দোলন থেকে সরে আসি। এরপর আমি গত ৩ আগস্ট ‘কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, কিন্তু এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পক্ষে না’ লিখে পোস্ট করি। এই পোস্টের কারণেই আমাকে বিভাগ থেকে বয়কট করা হয়েছে। আজ আমি পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় আমার সহপাঠীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে গেছে। আমি পরীক্ষা দিতে চাই। আমি তো কোনো অন্যায় করিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামী লীগও করি না,  ছাত্রলীগও করি না। আমি শুধু আমার দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়ে সেদিন পোস্ট করেছি। শুধু এতটুকুই। আমি শিক্ষকদের কাছে সব কিছু বলেছি। তারা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। বিভাগ থেকে লিখিত আকারে যদি আমাকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়া হয় তাহলে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি অ্যাকশন নিব।

বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম বলেন, পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত পরীক্ষার নতুন তারিখ এবং ওই ছাত্রীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগামী মঙ্গলবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে । সেখানে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক নিবন্ধনে ভাইভার নম্বর যুক্ত না করা কেন অবৈধ হবে না - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধনে ভাইভার নম্বর যুক্ত না করা কেন অবৈধ হবে না শিক্ষার ধাপে ধাপে তিন বছরে ঘুষ বেড়ে দ্বিগুণ - dainik shiksha শিক্ষার ধাপে ধাপে তিন বছরে ঘুষ বেড়ে দ্বিগুণ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে সহায়ক - dainik shiksha ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে সহায়ক দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা - dainik shiksha দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন শিক্ষার্থীর ৪ শিক্ষক, শতভাগ ফেল টানা তিনবার - dainik shiksha তিন শিক্ষার্থীর ৪ শিক্ষক, শতভাগ ফেল টানা তিনবার সাফল্য-সংগ্রামে উনিশ বসন্ত পেরিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha সাফল্য-সংগ্রামে উনিশ বসন্ত পেরিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্য নিরসনে একগুচ্ছ সুপারিশ সরকারিকৃত শিক্ষকদের - dainik shiksha বৈষম্য নিরসনে একগুচ্ছ সুপারিশ সরকারিকৃত শিক্ষকদের please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025441646575928