আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন রাজশাহী অঞ্চলের নার্সিং কলেজগুলোর ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রখর রোদে দীর্ঘক্ষণ অবস্থানের পর অসুস্থ হয়ে ১১ জন নারী শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরির বিভাগের ইনচার্জ ও হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর বিশ্বাস বলেন, নার্সিংয়ের ১১ জন নারী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। তীব্র রোদের মধ্যে থাকার কারণে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

রাজশাহীতে পরীক্ষার দাবিতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের প্রতীকী পরীক্ষা

এর আগে বেলা ১১টার দিকে পরীক্ষার দাবিতে রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে তাঁরা নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে ‘প্রতীকী পরীক্ষা’ দিয়ে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন তাঁরা। পরে বেলা পৌনে ১টার দিকে ‘প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি’ পালন করেন। প্রখর রোদের কারণে এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের দুটিসহ মোট ২৩টি নার্সিং কলেজ রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পরিচালিত হয়। এগুলোর মধ্যে চারটি সরকারি নার্সিং কলেজ আছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা ও ফলাফল না পেলে তাঁরা ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন না। এ ছাড়া আগামী বছরের মার্চে নার্সিং নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের ক্লাস ও মধ্যবর্তী পরীক্ষাগুলো অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কয়েক মাস ধরে তাঁরা পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন। গত ৩ জুলাই তাঁরা অনশন করে পরীক্ষার রুটিন পেয়েছিলেন। সে অনুযায়ী, গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর উপাচার্য এ জেড এম মোস্তাক হোসেন পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে তিনি পদত্যাগও করেছেন। এ ছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও পদত্যাগ করেছেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা আবার সেশনজটের আশঙ্কার মধ্যে পড়ে যান।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক মো. রায়হান আলী বলেন, তাঁরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষার দাবি করছেন। পরীক্ষা নেওয়াসহ ৭ দফা দাবির কথা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের বিষয়ে কোনো ধরনের আশ্বাস পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল তাঁদের পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী তাঁরা প্রতীকী পরীক্ষায় বসেছেন। সেখানে আন্দোলন চলাকালীন অন্তত ১১ জন অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছেন। দাবি আদায় হওয়া না পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। 

মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খন্দকার মো. ফয়সল আলম শিক্ষার্থীদের এই পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এই অবস্থার নিরসন দ্রুতই হবে। হয়তো কয়েক দিন পরীক্ষাটা পিছিয়ে যেতে পারে। আগামীকালের (রোববার) মধ্যে নতুন উপাচার্য নিয়োগ হতে পারে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপক হচ্ছেন যারা - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপক হচ্ছেন যারা ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের মসজিদ ইবাদাতের পাশাপাশি জ্ঞানচর্চারও একটি কেন্দ্র হতে পারে: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha মসজিদ ইবাদাতের পাশাপাশি জ্ঞানচর্চারও একটি কেন্দ্র হতে পারে: ঢাবি উপাচার্য ঢাকা বোর্ডের পরিদর্শক আবুল মনছুর ভূঁঞার ঘুষ বাণিজ্য - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের পরিদর্শক আবুল মনছুর ভূঁঞার ঘুষ বাণিজ্য দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049691200256348