আন্দোলন অব্যাহত ববি শিক্ষার্থীদের, সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার (৮ এপ্রিল) বরিশাল-কুয়াকাটা-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এই অবরোধ। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

গত ২৬ মার্চ থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। গত শনিবার রাজনৈতিক নেতা, বিভাগীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

সমঝোতা বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার থেকে সব ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম চালু হবে। তবে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা, বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের বসে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন।

অবরোধের কারণে দুই মহাসড়কে সব যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বরিশাল থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ভোলাসহ অন্তত ২০টি অভ্যন্তরীণ রুটে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

সড়ক অবরোধ করে একপর্যায়ে সেখানেই সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বক্তৃতা করেন শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন, আহমেদ সিফাত ও সফিকুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে লিখিত কোনো কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কোনো ক্লাস, পরীক্ষায় অংশ নেবেন না।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি আহমেদ সিফাত বলেন, আগামীকালের কর্মসূচি আজ সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হবে।

গত ২৬ মার্চ দুপুরে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বললে ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে নির্দেশ উপেক্ষা করে হলে অবস্থান করেন।

২৯ মার্চ উপাচার্য এস এম ইমামুল হক তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি দেন। বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সমঝোতার জন্য শনিবার রাজনৈতিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আয়োজনে সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সেখানে অংশ নেওয়া পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘উপাচার্য এস এম ইমামুল হকের পদের মেয়াদ রয়েছে প্রায় দুই মাস। এই দুই মাসে তিনি যাতে কর্মস্থলে না আসেন, সে লক্ষ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে একটি লিখিত সুপারিশ পাঠাব। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।’

পরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের ছুটি কিংবা পদত্যাগের বিষয়ে লিখিত কোনো সিদ্ধান্ত হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা একাডেমিক কার্যক্রমে যোগ দেবেন না। আন্দোলন থেকেও সরে আসবেন না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003399133682251