বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতার ও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার আশ্বাসে আন্দোলনের ইতি টেনেছেন ববি শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান আন্দোলনকারীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসন, বাস মালিক সমিতি, পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন ও নগরীর রূপাতলী হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত কুমার রায়, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন, বরিশাল পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিনউদ্দিন কালু, বরিশাল জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, রূপাতলী হাউজিং এলাকার বাড়ির মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন প্রমুখ।
বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফজলুল হক রাজীব। তিনি বলেন, ১৭ ফেব্র“য়ারি গভীর রাতে আমাদের ওপর হামলায় জড়িত কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত অপরাধীসহ জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করার নিশ্চয়তা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি ওইদিনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হবে না বলে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন বাস মালিক সমিতি ও পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। পাশাপাশি আমাদের মেসবাড়ির মালিকদের প্রতিনিধিরাও নিরাপত্তাদানের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আন্দোলন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী আরেক শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম জানান, হামলার ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীকে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল আমাদের প্রধান দাবি। এ দাবিগুলো বাস্তবায়নে কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশা করছি, দ্রুতই সব দাবি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হবে।
এ ব্যাপারে উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি বাস্তবায়নের ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীরা চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে।
বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিনউদ্দিন কালু জানান, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। কিন্তু এ হামলার সঙ্গে জড়িত দুর্বৃত্তরা পরিবহণ মালিক বা শ্রমিকদের কেউ না। আমরা শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দিয়েছি যে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী দুজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদেরও তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়া রূপাতলী এলাকায় পুলিশ টহল টিম ও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।