আবাসিক হলে মানসম্মত খাবার নিশ্চিত হোক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আমাদের দেশে মোট ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রতি বছর তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পায়। এসব শিক্ষার্থীকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জাতির সম্পদে পরিণত করার জন্য সরকার একটা বড় বাজেট দিয়ে থাকে। আমাদের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। তাদের কাজের মাধ্যমে আমাদের দেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তবে দেশকে এগিয়ে নিতে যাদের এত অবদান তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে অবহেলায়, অনাদরে। পড়ালেখার সুবিধার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক সুবিধা দেওয়া হলেও আবাসিক হলগুলোতে যে খাবার পরিবেশন করা হয়, তা অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায় খাবারের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তুকি দিলেও খাবারের মানের কোনো উন্নতি নেই। খাবার তৈরি করা হয় নোংরা পরিবেশে। রান্নায় ব্যবহার করা হয় পচা শাকসবজি, নিম্নমানের চাল। মাছ মাংসসহ পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণ করা হয় নোংরা পরিবেশে। রান্না করা খাবার রাখা হয় খোলা পরিবেশে যার ফলে খাবারের ওপর মশা-মাছির ছড়াছড়ি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডালের ঘনত্ব সম্পর্কে বেশি আর কম আমরা সবাই অবগত। সোশ্যাল মিডিয়ায় হরহামেশাই এই নিয়ে ট্রল হয়। একজন সুস্থ ও কর্মক্ষম যুবকের দৈনিক ২৫০০ ক্যালোরি আর যুবতীদের ২০০০ ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। হলগুলোতে যে মাছ-মাংসের টুকরো দেওয়া হয়, তা অত্যন্ত ছোট সাইজের। এছাড়া পরিবারের বাইরে থাকায় তিন বেলা খাবারের বাইরে তেমন কোনো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া হয় না অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। যার ফলে হলে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীরা প্রায় সময় পুষ্টিহীনতায় ভোগে। ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেয়ে প্রায় সময় রোগাক্রান্ত হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করা খাবার খেয়ে গ্যাস্টিক, আলসার, কিডনি সমস্যাসহ ক্যানসারের মতো জটিল ও কঠিন রোগ দেহে বাসা বাঁধে।

আবাসিক হলগুলোতে খাবারের সমস্যা অনেক দিনের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে মুনাফালোভী ডাইনিং পরিচালকরা আরো সুযোগ পাচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রভোস্ট এসে তদারকি করে গেলে কিছুদিন খাবারের মান ভালো হয় কিন্তু আবার কিছুদিনের মধ্যেই যে সেই আগের অবস্থা। শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের ভবিষ্যত্। সুস্থ সুন্দর পরিবেশে জ্ঞান লাভ করা তাদের মৌলিক অধিকার। তাদের যাতে জ্ঞান অর্জনে ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন। যদি জ্ঞান অর্জন করতে এসে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যহানি ঘটে তাহলে আমরা সুস্থ, সুন্দর, শিক্ষিত জাতি গঠনে ব্যর্থ হবো। দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধের পর ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে। এর মধ্যে ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, করোনা মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে আর তাই স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতের মাধ্যমে সুস্থ ও শিক্ষিত জাতি গঠন সম্ভব।

লেখক : মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010892868041992