আমরা সুবিচার পেয়েছি : নুসরাতের মা

ফেনী প্রতিনিধি |

নুসরাত জাহান রাফির খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে এজলাস কক্ষেই কাঁদলেন তার হতভাগ্য বাবা। বাড়িতে বসে কেঁদেছেন নুসরাতের মমতাময়ী মা। তবে তারা বলেছেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট। মেয়ের জন্যই তাদের এই কান্না।

নুসরাতের বাবা মাওলানা এ কে এম মুসা বলেন, সাড়ে ছয় মাস ধরে তার পরিবারের সদস্যরা কাঁদছেন। তবে ওই কান্না আর আজকের কান্নার মধ্যে তফাত আছে। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ব্যথা বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। সব আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় নুসরাতের আত্মা আজ শান্তি পাবে। তিনি দ্রুত তদন্ত শেষ করার জন্য পিবিআইকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

তবে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে মাওলানা মুসা বলেন, সব আসামির ফাঁসির রায় হওয়ায় তাদের অনুসারীরা এখন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যে কোনো ধরনের অপরাধ ঘটাতে পারে। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

মামলার বাদী ও নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, 'আমরা সুবিচার পেয়েছি। তবে রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না।' কাঙ্ক্ষিত রায় পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্নিষ্টদের কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরছান্দিয়া গ্রামে নুসরাতের বাড়িতে কথা হয় নিহতের মা শিরিন আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। তিনিও দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।

আলোড়িত এ মামলার রায় উপলক্ষে সোনাগাজীতে প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পৌর এলাকায় পুলিশ টহল দিয়েছে। সোনাগাজী-ফেনী সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছিল পুলিশের সতর্ক অবস্থান। নুসরাতের বাড়িতে ছিল বাড়তি পুলিশ। খাতায় স্বাক্ষর করে সবাইকে ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়েছে।

গোয়েন্দা রিপোর্টে আসামিদের পক্ষে ব্যাপক শোডাউনের আশঙ্কা করা হলেও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছুই হয়নি। রায় ঘোষণার পর পৌর এলাকার পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ শান্ত। তবে অন্য দিনের তুলনায় বাজারে লোকসমাগম তুলনামূলক কম লক্ষ্য করা গেছে। হাটবাজারের চায়ের আড্ডায় আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল নুসরাত হত্যার রায়।

নুসরাতের পাশের বাড়ির বাসিন্দা সোনাগাজী কাশ্মীর বাজার রোডের ব্যবসায়ী এজহারুল হক বলেন, মানুষের প্রত্যাশিত রায় হয়েছে। এ রায়ের পর নারীর ওপর নির্যাতন করতে অপরাধীরা সাহস করবে না। কলেজ রোডের ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, নুসরাতকে যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে আগুন লাগানোর ঘটনা, অধ্যক্ষের পক্ষে মানববন্ধন করা- সবকিছু কাছ থেকে দেখেছি। কয়েকজন আসামির আস্ম্ফালন দেখে মনে হয়েছে, তাদের বিচার কেউ করতে পারবে না। আজকের রায়ে আমার ধারণা পাল্টেছে, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে রায়ে আমি খুশি।

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। বিএনপি নেতা সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ইমাম উদ্দিন বলেন, নুসরাত আমার গ্রামের মেয়ে, কয়েকজন আসামিও আমার গ্রামের। তারপরও বলব, এ রায় ন্যায়বিচারের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নুসরাতের মাদ্রাসার (সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা) বর্তমান অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেন এমন নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য অল্প সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে - dainik shiksha শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি - dainik shiksha বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা - dainik shiksha শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে - dainik shiksha ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে - dainik shiksha নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে - dainik shiksha ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা - dainik shiksha জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028800964355469