বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হলো রাষ্ট্র সংস্কারের একটি প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে আমরা প্রথমে কোটা আন্দোলন করেছি, পরবর্তীতে ছাত্রসমাজ রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজানোর জন্য আন্দোলন করেছে। ছাত্রসমাজ তাতেও সফল হয়েছে। বর্তমানে দেশ ও জাতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নিরাপদে আছে। তাই আমি এ প্ল্যাটফর্ম থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাস সংস্কারের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সবার সঙ্গে কাজ করে যেতে চাই।
শনিবার (১৭ আগস্ট) এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পদ থেকে সরে যাওয়া নূর নবী।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। কেউ কেউ সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজিও শুরু করে দিয়েছে। এ ছাড়া সমন্বয়ক পরিচয়ে ক্যাম্পাসে আবার ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কেউ কেউ। তাই এসব কিছু বিবেচনা করে আমি আমার নাম সমন্বয়ক থেকে সরিয়ে নিয়েছি।
নূর নবী বলেন, দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্বে নিয়োজিত হয়েছেন। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল না তখন আমরা অনেক ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার কাজ করেছি। আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে কেউ কেউ চাঁদা দাবি করেছে স্থানীয়দের কাছে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সংস্কার ও দেশের একটি মডেল ক্যাম্পাসে রূপ দান করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
ক্যাম্পাস সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জবি সংস্কার আন্দোলন নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি। যেখানে প্রতিটি বিভাগের প্রত্যেক ব্যাচ থেকে একজন প্রতিনিধি থাকবে। প্রতিটি বিভাগ থেকে একজন করে বিভাগ প্রতিনিধি নিয়ে এ প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছে।
কে প্রতিনিধি হবে তা ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরাই ঠিক করে দেবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব ন্যায্য অধিকার আদায়ে কাজ করা হবে। আমরা যারা সমন্বয়ক হিসেবে ছিলাম, আমরাও যেহেতু ওখানে থাকব, তাই একাধিক প্ল্যাটফর্ম থাকার মানে হয় না। এসব কিছু বিবেচনা করে আমি সমন্বয়ক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।
এর আগে আজ সকালে একটি ফেসবুক পোস্টে সমন্বয়ক পদ থেকে সরে যান তিনি। নূর নবী ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আজ থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। ব্যক্তি স্বার্থবিহীন এ আন্দোলনে শুরু থেকেই মাঠে থেকেছি। আমি রাজপথে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছি, ময়দান থেকেই গুম হয়েছি এবং পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কারাগারে গিয়েছি। এসব কিছুর ঊর্ধ্বে আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। সে ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমি সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব, ইনশাআল্লাহ।