নতুন শিক্ষাক্রম ভাবনাআমাদের কারিকুলাম সবসময় ভালো ছিলো

আসাদুল ইসলাম, জবি |

যুগের চাহিদা পরিবর্তন। জীবনও পরিবর্তনশীল। সেই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে, গ্লোবাল প্রয়োজনীয়তা চিন্তা করে, লেবার মার্কেটের কথা চিন্তা করেই কিন্ত কারিকুলাম তৈরি করা হয়। যদি একটা নিয়ে পড়ে থাকি তাহলে পরিবর্তনটা আসবে না। সুতরাং এটা খুবই দরকারি। এখন কারিকুলাম চেঞ্জ করতে গিয়ে যেটা হয়, একটা চেঞ্জে যখন আমরা চলে যাই, সেক্ষেত্রে সময়ের প্রয়োজন। নতুনটা গ্রহণ করতে একটু সময় লাগে। বিভিন্ন মতামত আসে। এই ক্রাইসিসটা থাকবে।

সম্প্রতি দৈনিক আমাদের বার্তাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নতুন কারিকুলাম নিয়ে এমন মন্তব্য করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহান।

অধ্যাপক মনিরা বলেন, শিক্ষকরা বলছেন যে এটাতে যখন আমরা ভালোভাবে পরিচিত হয়ে যাবো, তখন এটা কাজে দেবে। কিন্ত এটা সহজ বিষয় না। এক সময় আমরা পাঠ্যপুস্তক পড়াতাম, ওইভাবে খাতা দেখতাম। সেটা থেকে একদম ভিন্ন একটা একটা জিনিস এসছে। তো এখানে সময়ের ব্যাপার রয়েছে।

প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তিনি বলেন, যে জিনিসটা আমি ইম্পিলিমেন্ট করতে যাচ্ছি সেটার কোথায় কোথায় আমার বাধা আছে, চ্যালেঞ্জেস আছে এগুলোর ইমপ্রুভমেন্ট আনার জন্য রিসার্চের দরকার আছে। গবেষণা না হলে তো নতুন জ্ঞানটা আসে না। আশা করছি, কারিকুলাম বোর্ডে যারা আছেন তারা বেজলাইন ধরে রিসার্চ করেছেন এবং ইম্পিলিমেন্ট করার পর কি কি চ্যালেঞ্জেস আসবে সেটাও তারা মনিটর করে বের করে নিয়ে আসবেন। সেগুলো তারা ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করবেন। 

ড. মনিরা আরো বলেন, আসলে আমরা যে হাতে কলমে শেখাকে এক্সপেরিয়েন্সিয়াল লার্নিং বলছি, আর ইভাল্যুয়েশনের ক্ষেত্রে বলছি কম্পিটেন্সিবেজড ইভাল্যুয়েশন। আমরা তো আসলে ফিনল্যান্ডের কারিকুলামটা নিয়ে আসছি। এক্ষেত্রে একটা দেশেরটা যখন আমরা নিয়ে আসব তখন আমাকে আমাদের কনটেক্সটটা দেখতে হবে। বাইরে যখন ওরা এটা করে তখন তাদের সেটার জন্য যথেষ্ট সাপোর্ট আছে। আমাদের স্কুলগুলোতে ওই সাপোর্টগুলো নাই। 

শিক্ষা উপকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন উপকরণের কথা বলি, তখন দুই রকম জিনিস দেখি। একটা হলো এক্সপেন্সিভ, আরেকটা হলো সহজলভ্য। আমাদের এখানে ক্লাসে যেমন নাচ শিখে, তখন ওই নাচের ড্রেসগুলো বাসা থেকে আনতে হয় যা খুবই এক্সপেন্সিভ। এখানে একেকটা রোল প্লেয়িংয়ের বিষয় আছে। প্যারেন্টসরা বলছেন, আমরা খরচ সামলাতে টায়ার্ড হয়ে যাচ্ছি। খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়ে অধ্যাপক মনিরা জাহান বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভালো কিছু আনার জন্যই তো আসলে নতুন কারিকুলামটা করা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় আছে, যেমন ইভাল্যুয়েশনের ক্ষেত্রে দেখতে হচ্ছে, বাচ্চারা তার বিছানা গুছালো কিনা, ডিম ভাজি করতে পারলো কিনা ইত্যাদি। আজকালকার বাচ্চারা ইউটিউব দেখেই অনেক কিছু পারে। অ্যাসেসমেন্ট কিছুটা এখন পিতামাতার হাতে দিয়েছে। তারা কিন্তু মার্ক ওরিয়েন্টেড। কতোটুকু বাচ্চারা শিখেছে সেটা না। সুতরাং দেখা যাবে, না পারলেও প্যারেন্টস নিজে সেটা করে দেবে। এ বিষয়টা আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। আমাদের ইম্পিলিমেন্টের ক্ষেত্রে এমন কিছু আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জায়গা রয়ে গেছে। আমরা আগে যে একটা রচনা লিখতাম, বর্ণনা লিখতে পারতাম। এখন বাচ্চাদের এই দক্ষতাটা আর থাকবে কিনা সেটা আমাদের দেখতে হবে।

মনিরা জাহান বলেন, এখন পরীক্ষা সিস্টেমটা উঠিয়ে দিচ্ছে। বাইরে কিন্তু পরীক্ষা সিস্টেমটা আছে, কানাডা, ইউকে বা ইউএসএতেও আছে। আমার নিজের মেয়ে সেখানে পড়ে। তার রেজাল্টও আমার কাছে আছে। আমাদের কারিকুলাম সবসময় ভালো ছিলো, আগেও ছিলো। আমরা বারবার কিন্তু চেঞ্জগুলো নিয়ে আসছি। এর ফলে আমরা যাদের ভবিষ্যতের নাগরিক বলছি তারা কতটা দক্ষ হয়ে উঠবে এটা চিন্তার বিষয়।  

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কলেজে সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া কোটায় ভর্তির সুযোগ - dainik shiksha কলেজে সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া কোটায় ভর্তির সুযোগ শিক্ষা সংস্কারে বাংলাদেশ-চীন কাজ করবে - dainik shiksha শিক্ষা সংস্কারে বাংলাদেশ-চীন কাজ করবে বয়স ৯ না হলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন নয় - dainik shiksha বয়স ৯ না হলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন নয় প্রাথমিকের ডিজিকে অপসারণে পঞ্চম দিনের আন্দোলন - dainik shiksha প্রাথমিকের ডিজিকে অপসারণে পঞ্চম দিনের আন্দোলন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য আহ্বান ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ হতে আগ্রহী হাজারো শিক্ষা ক্যাডার ! - dainik shiksha ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ হতে আগ্রহী হাজারো শিক্ষা ক্যাডার ! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া কর্মচারীদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া কর্মচারীদের তথ্য আহ্বান এমপিওবিহীন ৩য় শিক্ষকদের বাদ পড়ার কারণ জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha এমপিওবিহীন ৩য় শিক্ষকদের বাদ পড়ার কারণ জানতে চায় অধিদপ্তর সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষা ফিরছে - dainik shiksha সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষা ফিরছে অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030760765075684