আর্থিক অনটনে কলেজে ভর্তি হতে না পেরে যা করলেন জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার এক ছাত্র ভোকেশনাল শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও আর্থিক অনটনের কারণে কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে সড়কে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তবে বিষয়টি নজরে আসে টহলে থাকা পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হকের। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেন। পরে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমের নির্দেশে ওই শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছে পাঁচবিবি থানা পুলিশ নিয়েছি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতের বেলায় ওই পথে সীমান্তবর্তী বাগজানা এলাকায় টহলে যাচ্ছিলেন পাঁচবিবি থানার ওসি মো.জাহিদুল হক। দূর থেকে গাড়ি আলোয় দেখতে পান কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। তখন দ্রুত গাড়িটি ওই ছাত্রের সামনে দাঁড় করিয়ে ওসি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ওই ছাত্রকে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়ে তার প্রাণ বাঁচান।

ওই ছাত্রের বাবা-মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কিছু দিন আগে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় এ-প্লাস পেয়ে পাস ওই শিক্ষার্থী। কিছুদিন আগে সে কলেজে ভর্তির জন্য পরিবারের কাছে টাকা চায়। কিন্তু অভিভাবকরা পড়ালেখা না করে তাকে কাজে যোগ দিতে বলেন। এতে মন খারাপ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় ওই শিক্ষার্থী। শুক্রবার সকালে পাঁচবিবি থানার ওসি তাদের থানায় দেখা করতে যেতে বলেন। ওই কাছ থেকেই সন্তানের আত্মহত্যার চেষ্টার কথা জানতে পারেন অভিভাবকরা। পরে ওই শিক্ষার্থীর পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বলে ওসি অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন। 

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক

ওই ছাত্রে মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শুক্রবার সকালে থানায় গেলে ওসি আমাদের নাস্তা করিয়ে বলেন, আপনাদের ছেলের কলেজের ভর্তি খরচ আমি দিলাম। এটা শুনে চোখ দিয়ে আমাদের চোখে আনন্দের জল চলে আসে। ভগবান ওসির ভালো করুক। ছেলে এখন কলেজে যাবে। 

জানতে চাইলে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জনগণের জানমালের নিরপত্তায় কাজ করছে পুলিশ। রাতে পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাগজানা এলাকায় টহলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই গাড়ির আলোয় দেখতে পাই কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দেয়ার চেষ্টা করছে। তখন ছেলেটির সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালে সে কিছুটা ভয় পায়। পরে ছেলেটির কাছ থেকে এ কাণ্ড ঘটানোর কারণ জানতে পারি। সে জানায় এ বছর জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে কিন্তু পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সে কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। এ কারণে সে হতাশা। রাতের বেলায় ছেলেটাকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে সকালে মা-বাবাকে নিয়ে থানায় আসতে বলি। এদিকে বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যারকে জানালে তিনি ছেলেটার কলেজে ভর্তি করে দেয়ার নির্দেশ দেন। ওই ছেলের কলেজে ভর্তি ও ওর দায়িত্ব আমরা পাঁচবিবি থানা পুলিশ নিয়েছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু - dainik shiksha পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত - dainik shiksha অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে - dainik shiksha গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026681423187256