ক্ষতিকর পটেটো ভাইরাস কিভাবে চিহ্নিত করা যায় তার ওপর কাজ করে সফলতা পেয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এই গবেষণার ফলে মারাত্মক কিছু ভাইরাসকে চিহ্নিত করে ভালো টিউবার (বীজ) থেকে রোগাক্রান্ত টিউবারগুলোকে আলাদা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন।
ড. বেলাল জানান, মারাত্মক ভাইরাসগুলোর কন্সেন্ট্রেশনটা (ঘনত্ব) খুবই কম থাকে। এজন্য সাধারণ ভাইরাস শনাক্তকরণ পদ্ধতি যেমন বায়োলজিক্যাল প্রোপার্টিজ বেস, বায়ো-ফিজিক্যাল প্রোপার্টিজ বেস, সেরোলজিক্যাল বেস পদ্ধতি ব্যবহার না করে পিসিআর সিস্টেম ব্যবহার করতে হয়। শনাক্ত করা হয় ২ ধরনের স্যাম্পল। তা হল লিপ স্যাম্পল এবং টিউবার স্যাম্পল। ভাইরাস শনাক্তকরণ প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ভাইরাসটি ক্ষতিকর নাকি উপকারী সেটা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে এবং পরবর্তীকালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভাইরাস ডিটেকশন প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। এই প্রটোকল ব্যবহারে ১৫-২০ দিনের মধ্যেই ভাইরাস চিহ্নিত করা সম্ভব।
তিনি জানান, সাধারণত বাংলাদেশে আলুর ফাঙ্গাস, ব্যাক্টেরিয়াল ও ভাইরাল রোগ হয়। এদের মধ্যে প্রথমত ২টি রোগ ম্যানেজমেন্ট ও কন্ট্রোল করা তুলনামূলক সহজ হলেও ভাইরাল রোগ কন্ট্রোল করা কিছুটা কঠিন। পটেটো লিপো ভাইরাস, পটেটো ভাইরাস ওয়াই, পটেটো ভাইরাস এক্স এসব ভাইরাসকে কীটনাশক প্রয়োগ করেও দমন করা আমাদের দেশের কৃষকদের জন্য কিছুটা কঠিন? এদের মধ্যে প্রথমত ২টি গ্রিন পিচ এপিট নামক পোকার আক্রমণে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়ায়। এই পোকাটি পাতার নিচে অবস্থান করে এবং সেখানে কীটনাশক পৌঁছে না। তিনি বলেন, এই প্রটোকলের মাধ্যমে ভাইরাস চিহ্নিত করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি জিন প্রয়োগের মাধ্যমে অথবা আরএনএ’র উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। সফলতার সঙ্গে নতুন জাত বিদেশেও রফতানি করা যাবে।
ড. বেলাল জানান, দেশের এয়ারপোর্ট, সি-পোর্ট ও ল্যান্ডপোর্টের অফিসগুলোতে যদি চঈজ সিস্টেমটি স্থাপন করা যায় তাহলে দেশে ভাইরাসযুক্ত আলুর টিউবার প্রবেশ করতে পারবে না। একইভাবে দেশের বাইরে রফতানির ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক হবে। এটি একটি প্রতিষ্ঠিত প্রটোকল। এটি এখন যে কেউ ব্যবহার করে ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারবে। এটি ব্যবহারের ফলে দেশের কৃষকরা বাজার থেকে ভাইরাসমুক্ত বীজ কিনে লাভবান হবেন। যদি দেশে ওই প্রটোকলে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলো দ্রুত ছড়িয়ে দেয়া যায় এবং এর জন্য গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো যায় তাহলে দ্রুত সফলতা সম্ভব।