আস্থা হারাচ্ছে মহিলা মাদরাসা?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কওমি মহিলা মাদরাসার প্রচলন বাড়তে থাকে। কিছু উলামায়ে কেরাম এটিকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও এর বিরোধিতা করেছেন প্রথম সারির অনেক আলেম। তাঁরা বলেছিলেন, এই মহিলা মাদরাসাগুলো একসময় ফিতনার কারণ হবে। মহিলা মাদরাসা নিয়ে নানা মতবিরোধ থাকলেও গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান। শুরুর দিকের মাদরাসাগুলো বড় বড় মুরব্বির কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন আর তা নিয়ন্ত্রণে নেই। যার ইচ্ছা হচ্ছে সে-ই ছোটখাটো ফ্ল্যাট ভাড়া করে খুলে বসছে মহিলা কওমি মাদরাসা। ফলে তাদের শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেণ  সাআদ তাশফিন।

 

ইদানীং গণমাধ্যমে উঠে আসছে মহিলা মাদরাসায় সংঘটিত নানা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। এই ঘটনাগুলো অন্তত মাদরাসা নামের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কেউ আশা করে না।

সম্প্রতি মহিলা মাদরাসাকেন্দ্রিক কিছু ঘটনা গোটা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের হতাশ করে তুলছে। কলুষিত করছে গোটা আলেমসমাজকে। কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ তাদের মহিলা মাদরাসাকে জাহান্নামের টুকরায় পরিণত করছে। জাহান্নামের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলা মাদরাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গুনাহ হবে, হুজুরের কথা না শুনলে জাহান্নামে যেতে হবে—এমন আরো নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে গত তিন বছরে ১১ জন মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড় এলাকার দারুল হুদা মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত (২৭ জুলাই) শনিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এর আগে ছয় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কেন্দুয়ার আঠারবাড়ী এলাকায় মা হাওয়া (আ.) কওমি মহিলা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক। র‌্যাবের দাবি, তিনি ধর্ষণের পর বিষয়টি গোপন রাখতে ছাত্রীদের কোরআন শরিফ ছুঁয়ে শপথ করাতেন। ধর্ষণের শিকার শিশুদের বয়স ছিল ৮ থেকে ১১ বছর। (ঢাকা ট্রিবিউন, ৬ জুলাই ২০১৯)

১০-১২ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বায়তুল হুদা ক্যাডেট মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল আমিন (৪৫)। গজবের ভয় দেখিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারীর উত্তর বাইটকামারীর মাদরাসা মুহতামিম আব্দুল বাছেদের বিরুদ্ধে। (ঢাকা টাইমস, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮)

মহিলা মাদরাসায় সংঘটিত এ ধরনের জঘন্য ঘটনাগুলো দিন দিন ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে সব শ্রেণির মানুষের মাঝে। গুটি কয়েক খারাপ মানুষের অপকর্মে ইমেজ সংকটে পড়ছে গোটা আলেমসমাজ। তাদের অবস্থা থেকে প্রশ্ন জাগছে, সত্যিই মহিলা মাদরাসাগুলো ফিতনার রূপ ধারণ করেনি তো? লাগামহীন গড়ে ওঠা ‘মহিলা মাদরাসা’ নামের প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলছে না তো? তাই বিজ্ঞ আলেমদের উচিত, গোটা আলেমসমাজকে এই মহামারি থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027890205383301