ইউএনওর স্ত্রীর অধিকার চান শিক্ষিকা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন এক শিক্ষিকাকে। এমন অভিযোগ জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় স্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে শিশু সন্তানকে নিয়ে ইউএনওর বাসায় গেলে তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ইউএনওর কাছে স্ত্রীর অধিকার চেয়ে সন্তানকে নিয়ে পরিষদের সামনে সড়কে বসে প্রতিবাদ জানান ওই শিক্ষিকা। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। 

গতকাল বুধবার বিকেলে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে মাঝখানে বসে এর প্রতিবাদ জানায় জিনাত আরা খাতুন নামের ভুক্তভোগী ওই নারী। শুধু তাই তিনি ও তার সন্তানের সঙ্গে ইউএনওর একাধিক পারিবারিক ছবি সংবাদিকদের দিয়েছেন। জানা গেছে, জিনাত আরা দিনাজপুরের কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক।

শিক্ষিকা জিনাত আরার অভিযোগ, বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বুরুজ গ্রামের জোনাব আলীর বিবাহিত ছেলে আরিফুল ইসলাম তৎকালীন দিনাজপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমির দায়িত্বে থাকার সময় দিনাজপুর সদর উপজেলার উপশহর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে শিক্ষিকা জিনাত আরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় ২০ লাখ টাকা দেনমোহরে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের সময় তিনি প্রথম স্ত্রীর পরিচয় গোপন রাখেন। তাদের সংসারে ১৭ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইউএনও আরিফুল ইসলামের দুই স্ত্রীর মোবাইল ফোনে দুজনই আরিফুলের স্ত্রীর পরিচয়ে ঝগড়া হয়। 

এরপর বুধবার বিকেলে ইউনওর স্ত্রী জিনাত আরা তার ১৭ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে ইউএনও বাসায় গেলে তার মোবাইল সেট কেড়ে নিলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ইউএনওর বাড়িতে থাকা আনসার সদস্য তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ সময় ইউএনওর স্ত্রী দাবিদার জিনাত আরা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে বসে পড়েন। 

এ সময় উৎসুক জনতা সড়কে ভিড় করলে দুপাশে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। এক পর্যায়ে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন্দ তার অফিসের নারী ও পুরুষ কর্মচারী ও স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী জোরপূর্বক ইউএনওর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যেতে চান। এ সময় শিক্ষিকা জিনাত আরা যেতে না চাইলে টেনে হিচড়ে উপজেলা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এরপর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কক্ষে বসিয়ে ইউএনওর স্ত্রীকে জানানো হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ইউএনও তার স্ত্রী জিনাত আরাকে তালাক দিয়েছেন। এমন খবর জানতে পেরে সন্ধ্যার পর ইউএনওর স্ত্রী জিনাত আরা তার সন্তানকে নিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। 

জানতে চাইলে ইউএনও আরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সে ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে বিয়ের জন্য বাধ্য করেছিল। ডিভোর্স হয়ে গেছে। সে সিনক্রিয়েট করার জন্য এখানে এসেছিলেন। সে এই কাজগুলো করে থাকেন। এটা ব্যক্তিগত বিষয় ছিলো। আমি আইনগতভাবে সমাধান করেছি। সন্তান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার তো চরিত্রের ঠিক নেই। এই বিষয়গুলো নিয়ে সে ইস্যু তৈরি করছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ঘটনাটি আপনারা যা শুনেছেন আমিও তাই শুনেছি। ঘটনার এক পর্যায়ে উনি (ইউএনওর স্ত্রী) সড়কে এসে বাসের সামনে দাঁড়িয়ে যান। পরে পাঁচ মিনিটের মতো গাড়ি কম চলেছে। পরে উনি একপাশে ছিলেন। অন্যপাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024440288543701