যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনে এখনও বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অভিবাসী রয়েছেন। অনেকে মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রতিবেশী কোনো দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কেমন আছেন তারা- এ নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি।
ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেলে পড়াশোনা করছিলেন মেহেদি হাসান রিজভী। ছয় বছর পড়াশোনার পর তার চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল আগামী এক মাসের মধ্যেই। এর মধ্যে শুরু হয়েছে যুদ্ধ।
মেহেদি হাসান বলেন, 'শুধু চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এর মধ্যেই যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। ৪০ কিলোমিটার হেঁটে পোল্যান্ডে এসে আশ্রয় নিয়েছি।'
মেহেদি জানেন না, এতদিনের পড়াশোনার ফল কবে তিনি দেখতে পাবেন। কবে একজন চিকিৎসক হতে পারবেন!
তিনি বলেন, 'আমি এমন এক অবস্থায় পড়েছি, ক্রেডিট ট্রান্সফার করে অন্য কোথাও ভর্তি হতেও পারব না। তবে আমাদের ইউনিভার্সিটি বলেছে, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা নেবে। না হলে ডিগ্রি দিয়ে দেবে। এখন সেজন্য অপেক্ষা করছি।
মেহেদির মতো শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। মেহেদির পড়াশোনা শেষ পর্যায়ে থাকলেও অনেকে রয়েছেন আরও বিপদে।
শেখ খালিদ বিন সেলিম ওডেসার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেলে চার বছর পড়াশোনা করছেন। তার পুরো কোর্স শেষ হতে আরও দুই বছর লাগার কথা। তবে যুদ্ধের কারণে মাঝপথে সেই পড়াশোনা শেষ করে তাকে এখন পোল্যান্ডে অন্য বিষয়ে ভর্তি হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, 'যুদ্ধের কারণে কবে ইউনিভার্সিটি খুলবে, কবে আবার সেখানে পড়ার সুযোগ পাব, জানি না। এত তাড়াতাড়ি ক্রেডিট ট্রান্সফার করে আনাও সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে এখানে (পোল্যান্ডে) লজিস্টিকস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টের ওপর ভর্তি হয়েছি।'
বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের হিসাবে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আগে দেশটিতে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের বড় একটি অংশই শিক্ষার্থী। টিউশন ফি কম হওয়ায় চিকিৎসা বা প্রকৌশলের মতো বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী ইউক্রেনকে বেছে নেন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই শিক্ষার্থীদের এখন বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে।