মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রাম চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দেখভালের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কিন্তু সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই ক্লাস শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
গত মঙ্গলবার গাজীপুরের মূল ক্যাম্পাসে বিবিএ, এলএলবি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ও নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স কোর্সে ক্লাস শুরু হয়। গতকাল বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক-পূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।
ভারপ্রাপ্ত ডিন বলেন, ১০ অক্টোবর থেকে মূল ক্যাম্পাসে স্নাতকে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। আর বাকি ৩০টি আসনে তৃতীয় মেধাতালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
তবে মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক কোর্স নিয়ে ইউজিসির আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মূলত কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষা দেখভাল করে। এর কার্যক্রম অনেকটা শিক্ষা বোর্ডের মতো। মূল কাজ অধিভুক্ত কলেজগুলোর পরীক্ষা নেওয়া। অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৯ লাখের বেশি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ডিগ্রি দেওয়া হয়। আছে পেশাগত কোর্সও।
প্রতিষ্ঠার তিন দশক পর এসে মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত ২০ জুলাই মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে চারটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তবে এতে রাজি নয় ইউজিসি।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসি ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশনা দিলেও মানেনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পরে রাষ্ট্রপতি বরাবর আপিল করার পরামর্শও আমলে নেয়নি। এরপর ৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি এবং এ-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় ইউজিসি। এরপর ৫ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে ইউজিসির এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ইউজিসির সঙ্গে এ নিয়ে চিঠি চালাচালির মধ্যেই গত মঙ্গলবার থেকে মূল ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
ইউজিসির আপত্তি মধ্যেই ক্লাস শুরুর বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন এবং এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।