বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেলে তাঁর বেতন ভাতা কত হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে? সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের বেতন ভাতা এক লাখ টাকার কিছু বেশি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বেতন ভাতা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। তাহলে ইউজিসির দ্বিতীয় শীর্ষ পদে নিয়োগ পাওয়া ওই সদস্য কী পাঁচ লাখ টাকা বেতন ভাতা পাবেন। ইউজিসিতে এমই এক সদস্যের বেতন ভাতা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব) এর কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেনকে গত ১২ জুন নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই আদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুজন শিক্ষককে সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই তিন সদস্যের নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, ‘তাঁরা বর্তমানে অধ্যাপক হিসেবে যে বতেন ভাতা পাচ্ছেন, মঞ্জুরি কমিশেনের সদস্য হিসেবে একই বেতন ভাতা পাবেন।’
ড. সাজ্জাদ হোসেন ইউল্যাব থেকে অধ্যাপক হিসেবে দুই লাখ টাকার বেশি বতেন ভাতা পেতেন। নিয়োগ আদেশ অনুযায়ী একই পরিমাণ বেতন ভাতা পাওয়ার কথা। তেমনটিও দাবি তার। কিন্তু ড. সাজ্জাদ হোসেনকে এই অঙ্কের টাকা দিতে আপত্তি। ইউজিসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধ্যাপকরা এক লাখ ১০ হাজার টাকা পেতে পারেন। সে অনুযায়ী তাঁর বেতন ভাতা নির্ধারণ করা উচিত ।এ কারণে বিষয়টির সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের দারস্থ হতে পারে ইউজিসি।
ইউজিসির পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার বলেন, নিয়োগ পাওয়া সদস্যের বেতন ভাতা কত হবে তা নির্ধারণ করা হবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।
ইউজিসির এক কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগ আদেশ অনুযায়ী ওই সদস্য ইউল্যাবে যে বতেন ভাতা পেতেন তাই পাওয়ার কথা। ড. সাজ্জাদ হোসেন কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন না। ফলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ভাতা নির্ধারণের সুযোগ নেই। তাকে বেতন কমিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের বেতন ভাতা দিতে হলে নিয়োগ আদেশ পরিবর্তন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন এক চেয়ারম্যান বলছেন, ‘আইন বেতন ভাতা নির্ধারণ কঠিন নয়। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের অর্ডিন্যান্সে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার ক্ষেত্রে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের’ কথা বলা হয়। তখন শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। অর্থাৎ ওই ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ বেসরকারি নয়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। নিয়োগ পাওয়া এই সদস্যের বেতন ভাতা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বেতন ভাতার অুনরুপ হবে।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় বলতে সরকারি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ধরা হলে ওই সদস্যের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে এমন কথা বলছেন ইউজিসির কোনো কোনো কর্মকর্তা।
শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব বেলায়েত হোসনে তালুকদার বলেন, দেশে এখন যথেষ্ট পরিমাণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে কারণে সরকারি মনে করছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদস্য নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু তাই বলে তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ে যে বেতন ভাতা পেয়েছেন তা পাবেন না। তিনি শিক্ষক হিসেবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে বেতন ভাতা পেতেন তা পাওয়ার সুযোগও নেই। এই বেতন ভাতা তো চেয়ারম্যানও পান না।