ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকরা পে-স্কেলে বেতন পাবেন

মিজান চৌধুরী |

ঘোষণার প্রায় তিন বছর পর ইবতেদায়ি মাদরাসার ১৫ হাজার শিক্ষককে অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিন হাজার ৪৩৩টি ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয় বেতন স্কেলের আওতায় এলো। এখন থেকে এ বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পাবেন।

আর ১৬তম গ্রেডে সহকারী ও ইবতেদায়ি ক্বারি শিক্ষক ৯ হাজার ৩০০ টাকা বেতন পাবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার এ সুবিধা দিয়েছে। অবশ্য আগামী জুলাই থেকে এটি কার্যকর হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বর্ধিত বেতন কার্যকর করতে অতিরিক্ত ১৮৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। বর্তমান ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা বেতন পান। আর সহকারী ও ক্বারি শিক্ষক ২৩০০ টাকা পান। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ হাজার টাকা এবং সহকারী ও ক্বারি শিক্ষকের বেতন সাত হাজার টাকা বাড়বে।

জানতে চাইলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান যুগান্তরকে বলেন, বেতন বাড়ানোর দাবি ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের। মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকার এ দাবি পূরণ করেছে। এতে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, চলতি বাজেটে এ বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। আগামী বাজেট থেকে পুরোপুরি বরাদ্দ রাখা হবে। আগামী জুলাই থেকে অবশ্য এটি কার্যকর হতে পারে। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে।

জানা গেছে, ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা অনুদান পাচ্ছেন। শুরুতে তারা ৫০০ টাকা করে পেতেন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে অনুদান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রধান শিক্ষকের ভাতা ২৫০০ টাকা এবং সহকারী ও ক্বারি শিক্ষকের ভাতা ২৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে তাদের জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হল।

ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোসহ একটি নীতিমালা অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে সারসংক্ষেপ পাঠায় অর্থ বিভাগ।

সারসংক্ষেপে বলা হয়- বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী একটি ইবতেদায়ি মাদরাসায় প্রধান শিক্ষকের পদ একটি, সহকারী শিক্ষকের পদ তিনটি ও ক্বারি পদ একটি। অনুদানের ওপর নির্ভর করে এসব মাদরাসাচলছে। পাশাপাশি বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী একটি মাদরাসার পেছনে ১১ হাজার ৭০০ টাকা ব্যয় হচ্ছে। আর জাতীয় বেতন স্কেলে একটি মাদরাসার পেছনে ৪৯ হাজার ৭০০ টাকা ব্যয় হবে।

প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো কার্যকর করা হলে প্রতিটি মাদরাসার পেছনে ৩৮ হাজার টাকা ব্যয় বাড়বে। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করা হলে এক বছরে এসব প্রতিষ্ঠানের পেছনে ১৮৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, বর্তমান এক হাজার ৫১৯টি মাদরাসার শিক্ষকরা অনুদান পাচ্ছেন। মাদরাসাগুলোতে কর্মরত আছেন চার হাজার ৫২৯ জন শিক্ষক। এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করা হলে অনুদান দেয়া বন্ধ করে বছরে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার ২৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

এ ছাড়া আরও এক হাজার ৯১৪টি প্রতিষ্ঠান অনুদানের বাইরে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে অতিরিক্ত ১১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

 

সূত্র: যুগান্তর


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031969547271729