দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত হয়েও শিক্ষাক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন থেকে বেতন না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ তাদের। এ অবস্থায় অবস্থান ধর্মঘট করছেন তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘটে এ অভিযোগ জানান বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা।
সংগঠনের সভাপতি কাজী মোখলেছুর এহমানের সভাপতিত্বে অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য দেন- মাওলানা মো. তাজুল ইসলাম ফরাজী, মাওলানা মোহাম্মদ আল-আমিন, মাওলানা সামছুল হক আনছারী, মো. খোরশেদ আলম, মো. নূরুল আমীন, ইনতাজবিন হাকিম, আবু মুছা ভূইয়া, মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের অর্ডিনেন্স ১৭ (২) ধারা মোতাবেক মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হয়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে একই পরিপত্রে রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাইমারি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি হয়ে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ৯ জানুয়ারি বিগত সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সরকারি একই সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।
তারা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি শিক্ষার্থী অতীতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও বর্তমানে ৫ম শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পায়। কিন্তু ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা জাতীয়করণ তো দূরের কথা এমপিওভুক্ত হয়নি। তারপরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বার বার সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সচিবরা আশ্বাস দিলেও ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ন্যূনতম বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়নি।
বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে একদফা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোকে জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।