ইবিতে ফের বেড়েছে সেশনজট, হতাশায় শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি |

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শেষ করতে পারছে না বেশকিছু বিভাগ। ফলে হতাশায় ভুগছেন এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা না নিয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্সের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেয়া, পরীক্ষার তারিখ পেছানো, ফল প্রকাশে কচ্ছপগতি, প্রশাসনিক জটিলতা, রাজনীতিতে শিক্ষকদের ব্যস্ততা ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিসহ নানা কারণে এই সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা কয়েক মাস আগেই স্নাতক শেষ করেছেন। তবে একই সেশনের ১১টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখনো স্নাতক শেষ করতে পারেনি। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগে তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা, আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা এবং আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ, সিএসই, ইইই ও গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস এবং ইংরেজি, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ও আইসিটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। এ ছাড়া ম্যানেজমেন্ট ও বাংলা বিভাগে চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হলেও ফল প্রকাশিত হয়নি। এ ছাড়া ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আইন, পরিসংখ্যান ও আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ না করে এবং ইমপ্রুভমেন্ট ও রিটেক পরীক্ষা ছাড়াই স্নাতকোত্তর ক্লাস শুরু হয়েছে এসব বিভাগগুলোতে।

তবে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সে এক বছর ধরে ক্লাস চললেও এখনো সেমিস্টার ফাইনালে অংশ নিতে পারেনি তারা। অন্যদিকে ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্সেও প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস ও ফরম ফিলআপ শেষ হলেও পরীক্ষা শেষ হয়নি। এদিকে আইসিটি, ম্যাজেনমেন্ট ও ইইই বিভাগে প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। এসব বিভাগগুলোতে ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা অন্য বিভাগের তুলনায় এক থেকে দুই সেমিস্টার পিছিয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টার শেষ হলেও ইংরেজি, বাংলা ও আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের পরীক্ষা শেষ হয়নি। এ ছাড়া ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অন্য বিভাগগুলোতে তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হয়েছে এবং বেশ কয়েকটা বিভাগে পরীক্ষা চলমান রয়েছে। তবে বাংলা, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিয়ারিং ও আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের কোনো পরীক্ষাই এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। 

এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেশনজটের কবলে পড়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারছি না, অথচ অন্য বিভাগের বন্ধুরা আমাদের আগেই পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। দিন যত যাচ্ছে, হতাশা ততই বাড়ছে। বিসিএস, বিজেএসসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরি পরীক্ষায় অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছি। এমন দুর্বিষহ সেশনজটের কবল থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই।

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি ড. মাহাবুুবুর রহমান বলেন, করোনার পরে কয়েকটি সেশনে দ্রুততার সঙ্গে পরীক্ষা নিয়েছি। ৫ মাসে সেমিস্টার শেষ করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব। আশা করছি এক/দুই বছরের মধ্যে বিভাগে আর সেশনজট থাকবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনায় দুটি বছর চলে গেছে, যেটা মেকাপ দেয়া একটু টাফ। তবে ঠিক হয়ে যাবে, একটু সময় দিতে হবে। যে বিভাগগুলোতে সমস্যা আছে, আমরা ভেরিফাই করে বিষয়টি দেখবো। শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আমরা প্রতিনিয়ত সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045051574707031