ইবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

ইবি প্রতিনিধি |
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২৬ জুলাই থেকে ১৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। শুরুতে দীর্ঘ এক মাসেরও অধিক সময় ধরে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এরপর ২ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছেন। 

 

সবশেষ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সভা করেছেন আন্দোলনকারীরা। সভায় শনিবারের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে উপাচার্যকে হটানোর কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
 
সভায় বক্তারা বলেন, আমাদের দাবি আইনসম্মত এবং যৌক্তিক। এগুলো মেনে নিতে হবে। উপাচার্য আপনি অমানবিক হবেন না। অনতিবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিন। আগামী শনিবারের মধ্যে যদি দাবি মেনে নেন, তাহলে আমরা আমাদের কাজে ফিরে যাবো। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অফিস চলবে না, কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। প্রত্যেক জায়গায় তালা ঝুলবে। পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। আপনার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে ছাড়বো। লাঞ্ছিত হয়ে এখান থেকে বিদায় নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করবেন না।
 
এছাড়া উপাচার্যের ফাঁস হওয়া অডিও প্রসঙ্গ এনে বক্তারা বলেন, উপাচার্য আপনার যে অডিও-ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে আপনি লজ্জিত না হতে পারেন। কিন্তু দেশে-বিদেশে আমাদের লজ্জার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। আপনি চার বছর পর এখান থেকে চলে যাবেন, কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তার গ্লানি বয়ে বেড়াতে হবে। অনতিবিলম্বে অডিওর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিন। 
 
এদিকে কর্মকর্তাদের একটি গ্রুপ ১৬ দফা দাবির দুই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। দাবিগুলো হলো- চাকরির বয়সসীমা ৬২ বছর করা ও পোষ্যকোটায় ভর্তিতে শর্ত শিথিল করা। অথচ এ দুটি দাবিই কর্মকর্তাদের প্রধান দাবি বলে জানা গেছে।
 
সভায় বিপক্ষদের চ্যালেঞ্জ করে আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি। যেসব কর্মকর্তা সামান্য কিছু অর্থের কারণে বিরোধিতা করছেন তাদের পরিণতি ভালো হবে না। আর আমাদের বিরুদ্ধে যারা কু-রাজনীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ে যাবো। তারা বলছে এখানে জামায়াত-বিএনপির লোক আন্দোলন করছে। আমরা তাদের বলতে চাই, আজ এখানে যারা বক্তব্য দিচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেখে যান তারা সবাই আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। 
 
এদিকে কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। সকাল ১০টায় উপাচার্যের কার্যালয়ের সভাকক্ষে পৃথকভাবে ইবি শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরামের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। এ সময় তিনি পরিস্থিতি নিরসনে শিক্ষকদের কাছে সহযোগিতা চান বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
 
এর আগে ২ সেপ্টেম্বর থেকে গৃহীত পূর্ণ কর্মবিরতি পালন কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক কাজে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ৩ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬১তম সিন্ডিকেটে অংশ নিতে দেননি আন্দোলনকারীরা। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তার অফিস ঘেরাও করে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শনিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। সবশেষ আজ সভায় উক্ত সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে শনিবার সভা ডেকে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড় শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু করলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু করলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় মেঘনার মোহনায় শিক্ষা বঞ্চনা - dainik shiksha মেঘনার মোহনায় শিক্ষা বঞ্চনা ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা ব্যয় আধিক্যের যৌক্তিকতা - dainik shiksha ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা ব্যয় আধিক্যের যৌক্তিকতা এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় বৃদ্ধি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053260326385498