ইবি ছাত্রী নওরিনের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

ইবি প্রতিনিধি |

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

আজ রোববার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নওরিনের বাবা টাঙ্গাইল সদরের ইসলামবাগ বাগমারা গ্রামের খন্দকার নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে মামলার আরজি দাখিল করার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলাম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। আদালত এই মৃত্যুর ঘটনায় আশুলিয়া থানায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলা এবং মৃত নওরিনের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দাখিল করার জন্য ওই থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আনোয়ারুল কবীর বাবুল মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে নওরিনের স্বামী চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার কলাকান্দা গ্রামের জহিরুল আলমের ছেলে ইব্রাহিম খলিল ও নওরিনের শাশুড়ি শামসুন্নাহারকে।

বাদী মামলার আরজিতে বলেছেন, তাঁর মেয়ে নওরিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্নাতক শেষ করেছেন। স্নাতকোত্তর করার আগেই গত ২১ জুলাই ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ইব্রাহিম একটি কোম্পানিতে আশুলিয়ায় চাকরি করেন। তাঁরা আশুলিয়ার পলাশবাড়ী নামাবাজার আব্দুর রহিমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

অভিযোগে বলা হয়, নওরিন স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতে চান। কিন্তু তাঁর স্বামী ইব্রাহিম ও তাঁর মা নওরিনকে আর লেখাপড়া করাতে চান না। বিয়ের দুই দিন পর থেকেই নওরিনকে আর লেখাপড়া না করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। 

৩ আগস্ট এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন স্বামী নওরিনকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। নওরিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় বাবার বাড়িতে যেতে চান। কিন্তু তাঁকে আটকে রাখা হয়। নওরিন বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাবাকে জানালে তিনি ইব্রাহিমকে ফোন করেন। কিন্তু ইব্রাহিম শ্বশুরকে জানান নওরিনকে বাড়ি যেতে দেওয়া হবে না। 

৮ আগস্ট নওরিনকে বাসায় আটকে রেখে স্বামী বাইরে বের হন। নওরিনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। বাদী তাঁর জামাতা ইব্রাহিমকে ফোন করলে তিনি জানান বাসায় ঢোকা যাবে না, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়ি থেকে মামলার বাদী তাঁর মেয়েকে দেখার জন্য টাঙ্গাইল থেকে আশুলিয়ার উদ্দেশে আসেন। বিকেলের দিকে ফোন করলে ইব্রাহিম জানান তাঁর মেয়ে ছয়তলা থেকে লাফ দিয়েছেন এবং হাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিকেলে হাবিব হাসপাতালে পৌঁছে বাদী তাঁর মেয়ে নওরিনের লাশ দেখতে পান।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে আলামত নষ্ট করার উদ্দেশ্যে আত্মহত্যার মামলা সাজিয়েছেন আসামি ইব্রাহিম। কারণ, ছয়তলা থেকে লাফ দেওয়ার পরে যেভাবে আহত হওয়ার কথা সে ধরনের কোনো আঘাত নওরিনের শরীরে ছিল না।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি হত্যার অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে আশুলিয়া থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করার জন্য বাদীকে বাধ্য করে এবং তাঁর টিপসই নেয়। পরে আবার হত্যা মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ পরে আসতে বলে।

উল্লেখ্য, নওরিনের মৃত্যুর পর তাঁর স্বামী ইব্রাহিম খলিল এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন।

 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কলেজে সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া কোটায় ভর্তির সুযোগ - dainik shiksha কলেজে সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া কোটায় ভর্তির সুযোগ শিক্ষা সংস্কারে বাংলাদেশ-চীন কাজ করবে - dainik shiksha শিক্ষা সংস্কারে বাংলাদেশ-চীন কাজ করবে বয়স ৯ না হলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন নয় - dainik shiksha বয়স ৯ না হলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন নয় প্রাথমিকের ডিজিকে অপসারণে পঞ্চম দিনের আন্দোলন - dainik shiksha প্রাথমিকের ডিজিকে অপসারণে পঞ্চম দিনের আন্দোলন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য আহ্বান ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ হতে আগ্রহী হাজারো শিক্ষা ক্যাডার ! - dainik shiksha ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ হতে আগ্রহী হাজারো শিক্ষা ক্যাডার ! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া কর্মচারীদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া কর্মচারীদের তথ্য আহ্বান এমপিওবিহীন ৩য় শিক্ষকদের বাদ পড়ার কারণ জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha এমপিওবিহীন ৩য় শিক্ষকদের বাদ পড়ার কারণ জানতে চায় অধিদপ্তর সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষা ফিরছে - dainik shiksha সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষা ফিরছে অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024700164794922