ইবি ছাত্রী নওরিনের মৃত্যু নিয়ে যা বললেন বাবা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় গত সোমবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার বাবা টাঙ্গাইল সদরের ইসলামবাগ বাগমারা গ্রামের খন্দকার নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

নজরুল ইসলাম তার মেয়ে নওরিনের মৃত্যু নিয়ে এক আবেগঘন বক্তব্য দিয়েছেন। নওরিনের মৃত্যু নিয়ে তার শিক্ষক বাবা যা বলেছেন তা নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো: 

‘আমি খন্দকার নজরুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। আমার মেয়ে নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী ছিলো। আমার মেয়ে সম্পর্কে বলা হচ্ছে ৬ তলা থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি বিষয়টি কোনো অবস্থাতে মেনে নিচ্ছি না, মেনে নিতে পারি না। কোনো অবস্থাতে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। আমার মেয়ে সংস্কৃতিমনা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার বিচরণ, সে ফেসবুকে লেখালেখি করে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তার বিচরণ আছে। এ কথা জেনেই ওই ছেলে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছিলো। কারণ, সে আমার মেয়ের একজন নিয়মিত ফলোয়ার ছিলো। বিয়ের পরপরই কেনো তার দুটি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়ে তাকে সম্পূর্ণভাবে এই জগত থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলো? যাতে সে কোনো যোগাযোগ মাধ্যমে আসতে না পারে। তার ওয়াইফাই লাইন কেটে দেয়া হলো। কোনো অবস্থাতেই যাতে সে এই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আসতে না পারে। কথা ছিলো বিয়ের পর আমার মেয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে। পরে আমার মেয়ের মাস্টার্সে ভর্তি হবে এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে হুমকি দেয়া হয় ভর্তি হলে তাকে ডিভোর্স দেয়া হবে। ঘটনার দিন মেয়ের ফোন বন্ধ পেয়ে আমরা দুপুর ১টার সময় বাইপাইলে রওনা হই। ওই ছেলেকে বলি আমরা রওনা হয়েছি। ছেলে ফোন করে বলে আপনারা ছয়টার আগে বাসায় আসবেন না বাসার বাহিরে থেকে তালা দেয়া আছে। বাসার বাইরে যদি তালা দেয়া থাকে তাহলে তিনটার সময় সে আমাকে ফোন করে বলে যে আপনার মেয়ে ছয় তলা থেকে লাফ দিয়েছে। রুম যদি বন্ধই থাকে তাহলে আমার মেয়ে ছয় তোলা থেকে লাভ দিলো কী করে? ৩৮ বছরের শিক্ষকতার জীবনে নিজের আদর্শ নীতি দিয়ে মেয়েকে এমন ভাবে গড়ে তুলেছি। আমার মেয়ে কখনো আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে না। তা ছাড়া আপনারা ফেসবুকে দেখে থাকবেন হত্যার বিরুদ্ধে অনেক কনটেন্ট আছে, আত্মহত্যার বিরুদ্ধে কাউন্সিল করে থাকে, কাজেই আমার মেয়ে কোনোভাবেই এই পথ বেছে নিতে পারে না। এটা আমি স্বীকার করি না, কোনো অবস্থাতে স্বীকার করবো না। এটাই বোঝা যাচ্ছে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। আমি এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নিতে পারি না। এটা একটা হত্যা এবং পরিকল্পিত হত্যা।’ 

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট নওরিনকে বাসায় আটকে রেখে স্বামী বাইরে বের হন। নওরিনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। বাদী তার জামাতা ইব্রাহিমকে ফোন করলে তিনি জানান বাসায় ঢোকা যাবে না, তাকে আটকে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়ি থেকে মামলার বাদী তার মেয়েকে দেখার জন্য টাঙ্গাইল থেকে আশুলিয়ার উদ্দেশে আসেন। বিকেলের দিকে ফোন করলে ইব্রাহিম জানান, তার মেয়ে ছয়তলা থেকে লাফ দিয়েছেন এবং হাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিকেলে হাবিব হাসপাতালে পৌঁছে বাদী তার মেয়ে নওরিনের লাশ দেখতে পান।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ - dainik shiksha পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি - dainik shiksha ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর - dainik shiksha বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত - dainik shiksha জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034379959106445